বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়ব্যাংক-শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে সব কিছু ফরমালিন দিয়ে ধ্বংস করেছে আ'লীগ :মির্জা...

ব্যাংক-শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে সব কিছু ফরমালিন দিয়ে ধ্বংস করেছে আ’লীগ :মির্জা ফখরুল

আওয়ামী লীগ পুরো সমাজেই ফরমালিন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণভবনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিএনপিকে ফরমালিন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে-প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সব কিছুতেই ফরমালিন দিয়েছে, পুরো সমাজেই ফরমালিন দিয়েছে। ব্যাংক-শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে সব কিছু ফরমালিন দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, তারা ক্ষমতায় এসে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে তারা এমনভাবে সংবিধান সাজিয়েছে যেন বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারে।

বিএনপির জন্ম অবৈধ বলে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর করা মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার এ বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করছেন। এ ধরনের ভাষণ ও বক্তব্যে তার স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী চেহারা প্রকাশ হয়েছে। তার এ বক্তব্যে মনে হয়, অহংকার ও আত্মম্ভরিতা দিয়েই তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।

এ ধরনের অহংকার ও আত্মম্ভরিতা ত্যাগ করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন দিতে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, জনদাবি মেনে নির্বাচন না দিলে স্বৈরাচারের পরিণতির মতো আপনাদেরও পরিণতি হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকার জনগণের মতামতকে তোয়াক্কা করে না। জনগণের ভোটে যে তারা নির্বাচিত হয়নি, এটাই তারা স্বীকার করে না। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই মিথ্যা কথা বলছেন, তারা নাকি ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আসলে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে। তিনি বলেন, বিএনপি কারও দয়ায় চলে না। বিএনপি জনগণের ভালোবাসা এবং সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করে। বিএনপিকে ধ্বংস করার বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং সেটা এখনও চলছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর জাতীয়তাবাদী শক্তির ধারক বাহক বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের ধারণা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের অধীন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেসময়কার সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্যু ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সেই এরশাদই এখন আওয়ামী লীগের সরকারের অংশীদার।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বারেবারে তাদের বহুরূপী চরিত্র প্রকাশ করেছে। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সঙ্গে একজোট হয়ে তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে আন্দোলন করেছে। ২০০৭ সালে মইন-ফখরুদ্দিনের অবৈধ সরকার যখন ক্ষমতা নেয়, তখন আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেছিলেন, এই সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। বিদেশে যেতে দেওয়ার শর্ত হিসেবে তিনি মইন-ফখরুদ্দিন সরকারকে বৈধতা দেবেন বলেছিলেন। তিনি বলেন, সেটা কোনো অপরিকল্পিত বিষয় ছিল না। আওয়ামী লীগকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছিল।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সেই দল, যারা ১৯৭৫ সালে মাত্র ১১ মিনিটে বাকশাল কায়েম করে। সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে। এখনও তারা বন্দুকের নলের জোরে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থেকে যেতে চাইছে। কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান, দলের যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ