শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়মঞ্জুর হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ আদালতের

মঞ্জুর হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ আদালতের

আদালত প্রতিবেদক (বিডিসময়২৪ডটকম)

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর হত্যা মামলায় পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ খন্দকার হাসান মাহমুদ ফিরোজ এই আদেশ দেন। এ মামলার প্রধান আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদসহ তিন আসামিই আদালতে হাজির হন। এ সময় জাতীয় পার্টির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিচারক বদল হওয়ায় এর আগে মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় থাকার পরও রায় পিছিয়ে যায়।

মঞ্জুর হত্যা মামলায় নতুন করে যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। ১০ ফেব্রুয়ারি এই দিন ধার্য করেন বিচারক খন্দকার হাসান মাহমুদ। ওই দিন রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক পরিবর্তন হওয়ায় আদালত নতুন করে যুক্তিতর্ক শুনানির আদেশ দেন।

এ মামলার আসামিরা জামিনে রয়েছেন।মামলার বাকিরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুল লতিফ,অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুর রহমান শামস ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তফা কামাল উদ্দিন।এদের মধ্যে আবদুল লতিফ ও শামসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে।

এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার রায়ের দিন রাখা হলেও বিচারক বদল হওয়ায় তা আটকে যায়। ওইদিন নতুন বিচারক জানান, রায় দেয়ার আগে তিনি মামলার যুক্তিতর্ক নতুন করে শুনবেন। আর বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্কের নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রচি কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পুনঃতদন্তের আবেদন করেন।

এ সময় এরশাদের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম এর বিরোধিতা করে বলেন, এটি মামলাকে বিলম্বিত করার কূটকৌশলমাত্র। দুপুরে শুনানি করে বিকালে পুনঃতদন্তের আদেশ দেন বিচারক হাসান মাহমুদ ফিরোজ।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে একদল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। ওই ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক হন জেনারেল মঞ্জুর। পুলিশ হেফাজত থেকে ১ জুন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নেয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এর ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন মঞ্জুরের ভাই। ওই বছরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তখনকার সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ অভিযোগপত্র দেন এবং বিচার শুরু করে আদালত। তবে সরকার বদল এবং দফায় দফায় রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনে মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে আসতে লেগে যায় আরো ১৮ বছর।

মামলার শুনানির সময় আত্মপক্ষ সমর্থনে এরশাদ বলেন, জেনারেল মঞ্জুরকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেয়ার জন্য তৎকালীন সরকার রেডিও টিভিতে ৫ লাখ টাকা ঘোষণা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

“ধরা পড়ার পর মেজর মঞ্জুরকে  চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনার পথে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এবং পরে নিরাপত্তা প্রহরীর সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে আবুল মঞ্জুর গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।”

তখনকার স্বরাষ্ট্র সচিব মাহবুবুজ্জামান এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, তখনকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের  নির্দেশে পুলিশ আবুল মঞ্জুরকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।

২০১২ সালের ২ অক্টোবর  নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ এজলাসে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন এরশাদ। মামলার অপর আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হকও আদালতে লিখিত বক্তব্য দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দসহ রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয় এ মামলায়। সাবেক সেনাপ্রধান আবু সালেহ মো. নাসিম এবং তৎকালীন মহানগর হাকিম আবুল হাসেমও ছিলেন সাক্ষীদের মধ্যে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ