রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়শান্তিরক্ষা মিশনে আরো ১১শ’ সৈনিক অন্তর্ভূক্ত

শান্তিরক্ষা মিশনে আরো ১১শ’ সৈনিক অন্তর্ভূক্ত

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আরো ১১শ’ সৈনিক বাংলাদেশের নির্ধারিত সৈনিক ছাড়াও জরুরী ভিত্তিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে জরুরিভিত্তিতে সৈনিক প্রেরণের অনুরোধের পর এসব অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।

এদিকে, বিশ্বের ৪৬টি শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১১ হাজার সৈনিক কর্মরত। গত তিন বছরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে বাংলাদেশের আয় ৯১৭ মিলিয়ন ডলার (৭ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা প্রায়) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে মোবাইলে যোগাযোগ করে দক্ষিণ সুদানে এই অতিরিক্ত সৈনিক প্রেরণের অনুরোধ জানান।

তিনি আরো বলেন, অতিরিক্ত সৈন্যদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পুলিশ সদস্য গত সোমবার ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুদানে পৌঁছেছে। শান্তিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদেরও শিগগিরই তাদের নতুন শান্তিরক্ষা মিশন দক্ষিণ সুদানে প্রেরণ করা হবে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক সৈনিক প্রেরণকারী দেশ। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৮ হাজারের অধিক সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বিশ্বের ৪৬টি মিশনে প্রায় ১১ হাজার শান্তিরক্ষী সদস্য কর্মরত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা নিয়ে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন পত্র-প্রত্রিকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সৈনিক নেয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ দেখানোর আশংকা প্রকাশ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, এটা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। আমাদের সৈনিকদের মিশনে অংশগ্রহণে কোন সমস্যা নেই বরং যোগ দেয়ার হার উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি সরকার প্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব সরাসরি যোগাযোগ করে সৈনিক নেয়ার উদ্যোগ তারই ইঙ্গিতবাহী।

ড. মোমেন বলেন, এর কয়েকদিন আগেও নিয়মিত ট্রিপ হিসেবে ’মালে’তে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে জাহাজে করে শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় সাড়ে ১২শ’ সৈন্য পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সদ্য বিদায়ী প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন  বলেন, বাংলাদেশের সৈনিকরা খুবই দক্ষ এবং কুশলী। তারা পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে বলে আমাদের সৈনিকদের চাহিদা বেশী শান্তিরক্ষা মিশনে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটরি (প্রেস) মামুন-অর-রশীদ বলেন, গাজিপুরে শান্তিরক্ষা মিশনে সৈনিক প্রেরণের ট্রেনিং সেন্টারটির প্রশিক্ষণের মান খুবই উন্নত। বিভিন্ন দেশের থেকে সৈনিকরা এসেও সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। যে কারণে সৈনিক প্রেরণে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ থেকেই আমরা এগিয়ে।

ড. অব্দুল মোমেন বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ এই সাড়ে তিন বছরে ৪২ হাজার ২৪৯ জন সৈনিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছে। যা পূর্ববর্তী চার বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশী।

তিনি বলেন,এই সময়েই বাংলাদেশী নারী পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। বর্তমানে প্রায় ৫শ’ নারী পুলিশ সদস্য রয়েছে এবং পুলিশ সদস্য ২০০৪ সালে থাকা ৪৯১ জন থেকে বেড়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জনে উন্নীত হয়েছে।সূত্র: বাসস

আরও পড়ুন

সর্বশেষ