নগরীতে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি করে বেড়ায় এমন একটি চক্রের মূল হোতা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ প্রকাশ মাসুদ (৪০)। ২৬ জুন শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার ৬ জন ডাকাতের ১ জন হলেন তাঁতী লীগের এই মাসুদুর রহমান। মাসুদুর রহমান আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর চৌধুরী বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল আলমের সন্তান।
পুলিশি তথ্য অনুযায়ী, মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে একটি ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বরের অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারার ও অপরটিও ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বরের দণ্ডবিধির ৩৮৯/৪০২ ধারার মামলা।
নগরীর আতুরার ডিপু এলাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন মাসুদুর রহমান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার স্ত্রী চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের সাবেক একজন শিক্ষার্থী।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ জানায়, এক ভোক্তভোগীর দায়ের করা মামলার তদন্তে গিয়ে ডাকাত চক্রের সন্ধান মিলে। এরইপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ২৬ জুন দিন ও রাতে বিশেষ একটি অভিযান পরিচালনা করে ফটিকছড়ি, কর্ণফুলী ও নগরীর ওয়াসা মোড় থেকে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, প্রথমে কর্ণফুলী এলাকা থেকে তাঁতী লীগের মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর ওয়াসা মোড়ে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সদস্য কামাল হোসেন, মোক্তার হোসেন, সাদ্দাম ও মো. এরশাদকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ ফটিকছড়ি থেকে শের আলী নামের চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত এ চক্রটিই নগরীর বিভিন্ন সড়কে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি করে থাকে। গত ১৬ জুন কোতোয়ালী থানাধীন জামিয়াতুল ফালাহ পশ্চিম গেইটে ফারুক আহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে চক্রটি জোরপূর্বক ফিল্মি স্টাইলে ৫ লাখ টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। মূলত এ ঘটনাই করা মামলার তদন্তে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ এবং একপর্যায়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় একটি দেশীয় তৈরী এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ, ৩টি টিপ ছোরা, দুটি মোটরসাইকেল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ জোন) মেহেদী হাসান বলেন, বিভিন্নি ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের সামনে ছদ্মবেশে ঘোরাঘুরি করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে পিছু নেয় চক্রটি। এ কাজে তাদের নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি বেদীর (সোর্স) ভূমিকায় থাকে। বেদীর কাজ হলো ব্যাংক থেকে বের হয়ে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিকে অনুসরণ করা এবং অন্যদের তথ্য সরবরাহ করা। এরপর অন্যরা বেদীকে অনুসরণ করে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অস্ত্র ছোরার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে সব কিছু লুন্টন করে চক্রটি চম্পট দেয়।