সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদটপমরক্কোতে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত ৬৩২

মরক্কোতে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত ৬৩২

মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৯ জন। আল-হাউজ, মারাকেশ, ওয়ারজাজেট, আজিলাল, চিচাউয়া এবং তারউদান্ত প্রদেশ এবং পৌরসভাগুলিতে হতাহতের সংখ্যা বেশি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলছে ।মরক্কোর রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল আল আওলা শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। একই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সও।

এর আগে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৯৬ জন এবং ১৫৬ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ভূকম্পনটি হয়।

ভূমিকপ্তের উৎপত্তিস্থল মরক্কোর ঐতিহাসিক শহর মারাকাশের ৪৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।

সংস্থাটি জানায়, শক্তিশালী ভূকম্পনটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮। কম্পনটির গভীরতা ছিল ১৮ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার। ভূমিকম্পটি ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ফলে মারাকাশের বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

৫০০ বছরের মধ্যে উত্তর আফ্রিকার দেশটির ওই এলাকায় এত বড় ভূমিকম্প হয়নি। উত্তর রিফ পর্বতমালার আল হোসেইমার কাছে ২০০৪ সালের ভূমিকম্পের পর থেকে মরক্কোর সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প এটি। এখন পর্যন্ত ৬৩২ জন প্রাণহানির খবর রেকর্ড করা হয়েছে।

অবশ্য মরক্কোর জিওফিজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, হাই এটলাসের ইঘিল এলাকায় ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

ভূমিকম্পে ধসে গেছে রাবাত ও মারাকাশের বহু বাড়ি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধসে যাওয়া বাড়ি, রাস্তার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফলে অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। আতঙ্কে মানুষ বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। এসময় চারিদিকে ধোঁয়ার কুন্ডলী ছড়িয়ে পড়ে।

মারাকাশের বাসিন্দা আব্দেলহক এল আমরানি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমি ভবন নড়তে দেখছিলাম। তখন আমি বাইরে বের হয়ে দেখি রাস্তায় অসংখ্য মানুষ। মানুষ আতঙ্কিত ও হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। শিশুরা কান্নাকাটি করছিল। ভূমিকম্পের পর ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক চলে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ এলেও কেউ আর নিজ ঘরে ফেরেননি।

এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এ ভূমিকম্পে বেশিরভাগ প্রাণহানি পাহাড়ি এলাকায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছের পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মনতাসির ইত্রি জানান, সেখানকার বেশিরভাগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে এবং লোকেরা নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের উদ্ধারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

আরও পশ্চিমে তারউদান্টের কাছের গ্রামের শিক্ষক হামিদ আফকার বলছিলেন যে, ভূকম্পনের সময় তিনি তার বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে পড়েন। এবং বেশ কয়েকটি ঝাঁকুনি অনুভব করেন। ।

তিন বলেন, পৃথিবীটি প্রায় ২০ সেকেন্ডের জন্য কেঁপে উঠল। আমি দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নেমে আসার সাথে সাথে দরজা নিজেই খুলে গেল এবং বন্ধ হয়ে গেল।

অ্যাটলাস পর্বতমালায় ‘তির্যক-বিপরীত ফল্টিং’ এ ভূমিকম্পের কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছে ইউএসজিএস। স্পেন ও পর্তুগালেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে খবর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ