সোমবার, মে ২৭, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিন আন্দোলনে কর্মীদের সাহসী ভূমিকা রাখার আহ্বান

আন্দোলনে কর্মীদের সাহসী ভূমিকা রাখার আহ্বান

চট্টগ্রাম অফিস (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের শেষ দিনে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন বিএনপি নেতারা। সমাবেশে বক্তারা বলেছেন তিনদিনের হরতালই শেষ নয়। আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলন কমসূচি আসবে। এজন্য নেতা-কর্মীদের সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তারা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার কাজিড় দেউড়ি থেকে চট্টগ্রামের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে মিছিল শুরু করে বিআরটিসি মোড়ে গিয়ে সমাবেশ করে। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে আসেন তারা। এরপর নেতারা কয়েকভাগ হয়ে নগরীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে গিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর চকবাজার ধনিয়ারপুল, দুপুর ১২টায় নগরীর নাসিমন ভবন চত্বরে ড্যাব ও মহিলা দলের পৃথক দুইটি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আবদুল্লাহ আল নোমান।

সকাল ১০টায় নগরীর একেখান মোড়ে পাহাড়তলী বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এবং বেলা ১২টায় সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া চকবাজার ধনিরপুল প্রধান বক্তার ও বিকেলে নাসিমন ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন তিনি।

বিকেল ৪টায় নগরীর নাসিমন ভবনের সামনে নুর আহমদ সড়কে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, দেশে অঘোষিত বাকশালী শাসন চলছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাকশাল পুন:প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে রক্ষী বাহিনীর আদলে ছাত্রলীগ- যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী রাস্তায় মহড়া দিচ্ছে।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কোন সরকার যখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন হোন্ডা, গুন্ডা ও সশস্ত্র ক্যাডার নির্ভর হয়ে পড়ে। বর্তমানে আওয়ামীলীগের অবস্থাও তাই হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধণীর মাধ্যমে আওয়ামীলীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে সংবিধানকে ওলট পালট করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পুন:রায় সংবিধান সংশোধণ করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। মিছিল, মিটিং, সমাবেশ চলবে। তিনি বলেন,‘শুনেছি লাঠিসোঠা নিয়ে আন্দোলন ঠেকাতে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নাকি কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু লাঠিসোঠা দিয়ে গণআন্দোলন ঠেকানো যাবেনা, কারণ তাদের সাথে জনগণ নেই। জনগণ এখন তাদের ভোটের অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছে। কোন সন্ত্রাসী বাহিনী, কোন দলীয় প্রশাসন আন্দোলন ঠেকাতে পারবেনা।

গত ৩ দিনে বহু নেতাকর্মীকে দলীয় সন্ত্রাসী ও পেটুয়া বাহিনী দিয়ে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন তিনি দেশে শান্তি নয় সংঘাতের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চান।

আওয়ামী লীগ নেত্রী বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই দেশকে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যতই নির্যাতন হোক না কেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক জনগণকে সরানো যাবে না।

বিগত পাঁচ বছরের হরতালের চেয়ে ৬০ ঘণ্টার হরতাল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম উল্লেখ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সারা দেশে হরতাল হচ্ছে। আন্দোলনে সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার আন্দোলন সংগ্রাম ব্যর্থ করতে চায়। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম ব্যর্থ করা যাবে না।

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদিকা বেগম রোজি কবির, জামায়াত ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর আমীর মওলানা আ ন ম সামশুল ইসলাম, বিএনপি নেতা এ এম নাজিম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সামশুল আলম, মাহবুবুর রহমান শামিম, জামায়াত ইসলাম নেতা আ জ ম ওবায়দুল্লাহ, বিএনপি নেতা এম এ সবুর, এড্ভোকেট আব্দুস সাত্তার, জাহাঙ্গীর আলম, আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ