সোমবার, মে ১৩, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়আক্রান্তদের শরীরে ৯৮ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে

আক্রান্তদের শরীরে ৯৮ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে

দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের শরীরে ৯৮ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।  ৫ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ফলাফল প্রকাশ করেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপাচার্য নিজেই। বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, গবেষণায় দেশের সব বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়। গবেষণায় মোট ৩০০ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।

গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ। তবে বিএসএমএমইউর গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সী পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৩০-৩৯ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। যেহেতু কোনো বয়স সীমাকেই কোভিড-১৯ এর জন্য ইমিউন করছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও যে কোভিড সংক্রমণ ঝুঁকি নেই, তা বলা যাচ্ছে না।  গবেষণায় আরও দেখা গেছে, করোনা রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন- ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস তাদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। যদিও এ গবেষণায় টিকার কার্যকারিতার বিষয়টি চলমান রয়েছে।

করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশে গত ডিসেম্বরে ইউকে বা আলফা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। পরে মার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। গত এক মাসের ৩০০ স্যাম্পলের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ। যদিও গবেষণার প্রথম ১৫ দিনে এ সংখ্যা ছিল ৩ শতাংশ। একজন রোগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছি মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (তদন্তাধীন ভ্যারিয়েন্ট)।এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যান আরও ২৪১ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৬৩৮ জনে। এছাড়া একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩ হাজার ৮১৭ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ লাখ ৯ হাজার ৯১০ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ৫১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।

বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ১১২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৪১ হাজার ১৫৭ জন। এর আগে ৩ আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৩৫ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া করোনা শনাক্ত হয় ১৫ হাজার ৭৭৬ জনের।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ