মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
প্রচ্ছদইসলাম ও জীবনভাগে কোরবানির বিধি বিধান

ভাগে কোরবানির বিধি বিধান

ইসলাম ধর্মে কোরবানীর ইতিহাস বেশ প্রাচীন। পবিত্র কোরআন শরীফে কোরবানী সম্পর্কে একাধিক সুরার উল্লেখ আছে। ইসলামে, হিজরী ক্যালেন্ডারের ১২ তম চন্দ্র মাসের জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১৩ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানী করার সময় হিসেবে নির্ধারিত। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানে কেউ একা কোরবানি দিবেন। আবার কেউ শরিকে বা ভাগে কোরবানি করবেন। তবে ইসলামী শরিয়াতে শরিকে কোরবানি করার ব্যাপারে কিছু বিধান রয়েছে। গরু, মহিষ ও উট এই জাতীয় যে পশুগুলো কোরবানির জন্য বৈধ, সেগুলোর মধ্যে ভাগে কোরবানি দেওয়া জায়েজ। নবী করীম (সা.) সাত ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়া অনুমোদন করেছেন। সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রাসুল (সা.) উটের মধ্যে ১০ ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। সুতরাং এ ক্ষেত্রে ভাগে কোরবানি করা জায়েজ, নাজায়েজ নয়। এটি প্রায় সব ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য।

তবে এই বিষয়ে বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বক্তব্যও রয়েছে। এই সকল বক্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া, এসবের পক্ষে সামান্যতম কোনো বর্ণনা নেই। কেউ কেউ বলেন যে, ভাগে কোরবানি দেওয়া জায়েজ নয়। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, সহিহ মুসলিমের রেওয়াতেরে মধ্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে রাসুল (সা.) ভাগে কোরবানি দেওয়ার ব্যাপারে রুখসাত (অনুমোদন) দিয়েছেন।

তবে জানা যায়, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কোরবানি দিতে পারবে। এগুলো দ্বারা একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করা সহীহ হবে না। আর উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হতে পারবে। সাতের অধিক শরীক হলে কারো কোরবানি সহীহ হবে না। সহীহ মুসলিম শরিফে হযরত জাবের (রা.) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে হজ করেছিলাম, তখন আমরা সাতজন করে একটি উট এবং একটি গরুতে শরিক হয়ে কোরবানি করেছি। উট, গরু ও মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যে কোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ।

তবে শরিকে কোরবানি করলে কারো অংশ এক-সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না, এমন হলে কোনো শরিকেরই কোরবানি সহীহ হবে না। এবং যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়্যাতে কিনে আনে। আর সে ধনী হয়। তাহলে তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ হলেও শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে ওই অংশের টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি গরিব হয়, যার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়্যাতে পশুটি ক্রয় করার মাধ্যমে লোকটি তার পুরোটাই আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরীক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে তবে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি। গরিব ব্যক্তি কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়্যাত করে নিতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ