ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি থেকে চুল পড়া রোধ করা সম্ভব বলে সম্প্রতি একটি গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে। ইএমবিও মলেকুলার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে একদল গবেষক বর্ণনা করেছেন কিভাবে ক্যান্সারের ওষুধে অবস্থিত ট্যাক্সেন চুলের ক্ষতি করে এবং কিভাবে এ ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গবেষণায় আরও বলা হয়, কেমোথেরাপির সময়ে চুল পড়া এমন একটি বিষয় যা ক্যান্সার রোগীদের মনকে সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত করে।
গবেষণায় গবেষক দলটি সিডিকে ৪/৬ ইনহিবিটার নামে একটি নতুন শ্রেণির ওষুধের গুণাগুণ ব্যবহার করেছে, যা কোষ বিভাজনকে বাধা দেয় এবং যা ক্যান্সার থেরাপি হিসাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনুমোদিত।
ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষণার শীর্ষ লেখক তালভীন পূর্বা জানান, ”প্রথমে আমাদের কাছে এটা অসম্ভব মনে হলেও, আমরা দেখেছি যে সিডিকে ৪/৬ ইনহিবিটারগুলি ব্যবহার করে চুলের ফলিকোষে অতিরিক্ত বিষাক্ত প্রভাবগুলিকে প্রচার না করে অস্থায়ীভাবে চুলের কোষ বিভাজন থামানো সম্ভব।“ তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন অর্গান-কালচারড হিউম্যান স্ক্যাল্প হেয়ার ফলিকলগুলি সিডিকে ৪/৬ ইনহিবিটারগুলিতে ডুবাতাম তখন চুলের ফলিকগুলি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্য সময়ের তুলনায় খুব কম ছিল।
ট্যাক্সেন ক্যান্সার নিরাময়ে ব্যবহৃত জনপ্রিয় একটি ওষুধ। কিন্তু এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে কখনও কখনও দীর্ঘস্থায়ী্ভাবে চুল পড়তে পারে যা স্তন ক্যান্সার বা ফুসফুসে কার্সিনোমা রোগীদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। এই চুল পড়া অনেক রোগীদের ক্ষেত্রেই ভয় এবং উৎকন্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পুর্বার মতে, “আমাদের গবেষণার একটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কেমোথেরাপির ক্ষেত্রে চুলের ফলিকগুলি ঠিক কীভাবে ট্যাক্সেনের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানায় তা বুঝতে পারা এবং আমরা দেখতে পেলাম যে চুলের ফলিকলের গোড়ায় বিশেষায়িত বিভাজনকারী কোষগুলি এবং যেই স্টেম সেলগুলি থেকে তারা উত্থিত হয় তারা ট্যাক্সিনের পক্ষে সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং, আমাদের অবশ্যই এই কোষগুলিকে অনাকাঙ্খিত কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করতে হবে।
গবেষকরা আরও জানান, ক্যান্সারের ওষুধের এই নতুন দিকের সফলতা আনতে এই ক্ষেত্রটিতে প্রচুর অনুদান এবং কাজ প্রয়োজন, কারণ অনেক ক্যান্সার রোগীই এই চুল ক্ষতি রোধে প্রকৃত সাফল্য দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন।