নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু ইকোনমি ও মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি, সাইবার সিকিউরিটি প্রভৃতি খাতে উভয় দেশ সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেছে। এসব বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পরে আপনার সঙ্গে আমার এটাই প্রথম ভিডিও কনফারেন্স। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিজয় ঘোষণার পরপরই আমাকে ও আমার দলকে অভিনন্দন জানানোর জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) এর আওতায় ভারত থেকে দোতলা বাস, একতলা এসি ও নন-এসি বাস এবং ট্রাক আমদানি; ভারতীয় আর্থিক অনুদানে পাঁচ জেলায় (জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন; ভারতীয় অনুদানে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় ১১টি পানি শোধনাগার স্থাপন; এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোতে ভারতের ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক (এনকেএন) সম্প্রসারণের আওতায় বাংলাদেশে উক্ত নেটয়ার্কের সম্প্রসারণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাষিক ভাষণ ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’-এ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে স্থান পেয়েছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা এক চিরন্তন মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এলওসির আওতায় ৬০০ বাস (৩০০ দোতলা বাস, ২০০ একতলা এসি বাস এবং ১০০ একতলা নন-এসি বাস) এবং ৫০০ ট্রাক (৩৫০টি ১৬-টন ট্রাক এবং ১৫০টি ১০-টন ট্রাক) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে। আশা করি, এরফলে বাংলাদেশের যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হবে এবং আমাদের মহাসড়কগুলোর যানজট খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বাংলাদেশের পাঁচ জেলায় ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ভান্ডারিয়ায় ১১টি পানি শোধনাগার ভারতীয় অনুদানে নির্মাণ করায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের স্বাস্থ্যখাতে গৃহীত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম সফল এ কার্যক্রম অনুন্নত অঞ্চলগুলোতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার কল্যাণ ও জনগণের সুষম পুষ্টি নিশ্চিতকরণে ইতিবাচক অবদান রাখছে। সবশেষে ভবিষ্যতে যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে এ ধরনের আরও বহু প্রকল্পের সাফল্যজনক সমাপ্তি উদযাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।