শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে আফসারুল আমিন ঘাটতি বাজেটের মধ্যে ৩২ হাজার কোটি টাকা...

আয়কর দিবসের অনুষ্ঠানে আফসারুল আমিন ঘাটতি বাজেটের মধ্যে ৩২ হাজার কোটি টাকা যোগান দেয় আয়কর বিভাগ

চট্টগ্রাম অফিস (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

পদ্মা সেতু, হলমার্ক দুর্নীতি ও শেয়ার বাজার ধসের কারণে দেশের ১৬ কোটি মানুষের কোন ক্ষতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা.আফসারুল আমিন।

মন্ত্রী রোববার দুপুরে চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে বলেন,‘পদ্মা সেতুর টাকা কি এসেছিল, নাকি দুর্নীতির চিন্তা করা হয়েছিল; এতে কি দেশের ১৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ? হলমার্কে অনিয়ম হয়েছে। এতে সোনালী ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, দেশের ১৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি।

‘শেয়ার বাজারে ব্যবসা করে যাদের টাকা উদ্বৃত্ত আছে তারা। এরকম মানুষের সংখ্যা ৮৪ লাখ। শেয়ার বাজার ধস হলে এখানেও ১৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি।’

তবে অনিয়মকে সমর্থন করেন না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,‘পদ্মা সেতু, হলমার্ক আর শেয়ার বাজারের অপবাদ আর অপপ্রচার মানুষের কান ভারি করেছে। রাজনৈতিক বিভাজনের কারণেই এ অপবাদ-অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।‘

জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ও সর্বোচ্চ করদাতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আয়কর বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ‍ডা.আফসারুল আমিন।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন,‘আমরা কি ভেবেছিলাম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে, শিশু ও মাতৃমৃত্যু কমে আসবে? কিন্তু আমরা তা অর্জন করতে পেরেছি। আর এ অর্জন সম্ভব হয়েছে দেশের সকল মানুষের সম্পৃক্ততার কারণে।’

জাতির উন্নয়নে কর বিভাগের অবদানে রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মোট ঘাটতি বাজেটের মধ্যে ৩২ হাজার কোটি টাকা যোগান দেয় আয়কর বিভাগ। এছাড়া অন্যান্য বিভাগও এ যোগান দিয়ে থাকে।

মেলাকে খোলা মনে কথা বলার উত্তম জায়গা মন্তব্য করে তিনি বলেন, মেলা মানে মিলনের জায়গা। খোলা মনে কথা বলার জায়গা।

সচেতনতা আর সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য পালন করা হয় কর দিবস।

এক সময় কর বিভাগ জনভীতির ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,‘এখন এ বিভাগ জনবান্ধব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয়কর ভীতি কাটিয়ে জনবান্ধব হলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য(তথ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা) ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ১৯৭২ সালে প্রথম বাজেট ছিল মাত্র ১০ কোটি টাকা। আর এবারে বাজেট ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বাজেটের এ বৃদ্ধি জনগণের করের টাকায় এগিয়েছে।

বর্তমানে দেশে ১৪ লাখ সক্ষম করদাতা প্রত্যক্ষ কর দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

কর আদায়ে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে তা সত্য। হয়রানি বন্ধ করতেই সব কিছু এখন অনলাইনে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।

অনুষ্ঠানে দীর্ঘ ও সর্বোচ্চ কর প্রদানের জন্য চট্টগ্রাম কর অঞ্চল সমূহের অধীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম জেলা, তিন পার্বত্য জেলা ও কক্সবাজার জেলার মোট ২৯জন ব্যক্তিকে সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।

এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় যে পাঁচজন ব্যক্তি করদাতা(দীর্ঘ ও সর্বোচ্চ) সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন তারা সবাই ঐতিহ্যবাহী একে খান পরিবারের। তবে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তাদের পরিবারের কেউ উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাদের পক্ষে একে খান গ্রুপের তিনজন কর্মকর্তা এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় একে খান গ্রুপের তিনজন সিআইপি (কমার্শিয়াল ইনপোর্টেন্ট পারসন) মনোনীত হওয়াতে তাদের ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে উপস্থিত থাকার কারণে এ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি।

চট্টগ্রাম অঞ্চল কর-১ এর কমিশনার দবির উদ্দিন জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিবছর সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে মনোনীত ১০ জন ব্যবসায়ীকে সিআইপি ঘোষণা করে। এবারো ১০ জনকে সেই সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে তিনজন চট্টগ্রামের একেখান গ্রুপের। তারা হলেন, সালাউদ্দিন কাশেম খাঁন, সদরউদ্দিন খাঁন ও এএম জিয়াউদ্দিন খাঁন।

সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্য থেকে হাবিবুল্লাহ খান, বাবু যতীন বড়ুয়া ও আবু তাহের রাজু বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ উল্লেখ করে হাবিবুল্লাহ খাঁন বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ছাড়া দেশের অগ্রগতি হয়না। এজন্য এনবিআরকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। কারণ ঘাটতি বাজেট পূরণের জন্য তাদের টার্গেট দেওয়া হয়।

আয়কর দিবস ও আয়কর মেলা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে দেশের আয়কর অনেক বেড়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্য সচেতনতা প্রয়োজন। কর না দিলে দেশ পরিচালনা অসম্ভব।

চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর কমিশনার-১ ও আয়কর দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক দবির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাংসদ আবদুর রহমান বদি, সদস্য কর ট্রাইব্যুনাল হায়দার খান, আপিল কমিশনার সেলিম আফজাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ