পাহাড়ধসের ঘটনায় সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় আমির খসরু এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহিতা নেই। তাই দুর্যোগে জনগণের প্রাণ গেলেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘চট্টগ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার ওয়ার্নিং (সতর্কতা) ছিল। সবাই জানে অতিবৃষ্টি হলে পাহাড়ধস হয়। তারপরও আমরা দেখেছি ২০০-এর কাছাকাছি লোক প্রাণ হারিয়েছে। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতার দুর্বলতা লক্ষ করছি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, ‘সব কিছুর শেষে হচ্ছে- যেখানে জবাবদিহিতা থাকবে না, সেখানে একটার পর একটা বিপর্যয় ঘটবে এবং দেশের জনগণ তার শিকার হবে।’
অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ধস, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে ও গাছপালা ভেঙে পড়ে পাঁচ জেলায় এ পর্যন্ত ১৫৬ জনের লাশ উদ্ধার করা করা হয়েছে। এর মধ্যে কেবল রাঙামাটিতেই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে ১১০ জনের প্রাণ। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৩৬ জন, বান্দরবানে ছয়জন, খাগড়াছড়িতে দুজন ও কক্সবাজারে দুজনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটিতে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় পাঁচ সেনাসদস্য নিহত হন।
বঙ্গোপসাগরে থাকা নিম্নচাপের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে টানা বৃষ্টি হয় সারা দেশে। সোমবার এটি বাংলাদেশের উপকূল ও স্থলভাগ অতিক্রম করে। এর প্রভাবে বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়ে। টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে গ্রাম-শহরে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। এ কারণে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়। অনেক স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয় নৌযান চলাচল।
গত সোমবার থেকে পাহাড়ি এলাকাগুলোয় একের পর এক পাহাড় ধসে পড়তে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে হতাহতের খবর মিলতে থাকে। বাড়তে থাকে লাশের সংখ্যা। এর মধ্যে ভোরে রাঙামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড়ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ওই সড়কে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৬০ সদস্যের উদ্ধারকর্মীর দল রাঙামাটিতে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।