সোমবার, মে ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েহিরণের পতনের কারণ

হিরণের পতনের কারণ

বরিশাল : সাড়ে ৪ বছর বীরদর্পে বরিশাল নগরী শাসন করেছেন শওকত হোসেন হিরন। ওই সময়ের মধ্যে তার গুনগানই ছিল দৃশ্যমান। বিসিসি’র এবারের তৃতীয় নির্বাচনেও তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী। গতকাল নির্বাচনের দিনও তার প্রভাব ছিল ব্যাপক। তবে হেরে যাওয়াটা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেন না তিনিসহ তার সমর্থকরা। নগরীর বিশিষ্টজনদের তাৎক্ষণিক মতামতে জানা গেছে, প্রধান পাঁচ কারণে হেরেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরণ। এগুলো হচ্ছে, বরিশাল নগরবাসীর অধিকাংশই আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী, সাড়ে ৪ বছরে মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীকে হিরণের সুবিধা প্রদান, সরকারের বিভিন্ন খাতের ব্যর্থতা (হলমার্ক, পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজার) হেফাজত ও গণজাগরণ মঞ্চ ইস্যু এবং বরিশাল আওয়ামী লীগের বৃহৎ অংশের বিরোধিতা।
সনাকের বরিশাল জেলা সভাপতি প্রফেসর মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, উপযুক্ত কারণ ছাড়াও বেশ কিছু আঞ্চলিক কারণে হিরণ হেরেছেন। এগুলো হচ্ছে, আত্মীয়করণ, অপরিকল্পিত নগর উন্নয়ন, করপোরেশনকে দলীয়করণসহ কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা। তিনি বলেন, হিরণ একটি নির্দিষ্ট বলয়ে আবদ্ধ ছিলেন। তিনি বুঝতে পারেননি তাদের পাশের মানুষ তার কতটা ক্ষতি করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুসল্লি জানান, নগরীর বায়তুল মোকাররমে যখন মুসল্লি¬রা নামাজ পড়তেন তখন এর পাশেই অশ্বিনী কুমার চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের নামে ইসলামবিদ্বেষী কর্মকান্ড চালাত সরকারদলীয় কিছু লোক। বরিশাল বিএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্র জানান, এই বিএম কলেজেই হিরণ সাহেবের সাঙ্গপাঙ্গরা অধ্যক্ষকে পিটিয়েছিল। যারা অধ্যক্ষকে মারতে পারে তারা নগরপিতা হতে পারে না। নবগ্রাম রোডের এক গৃহিণী জানান, টেলিভিশনে দেখেছি হেফাজতে ইসলামের নেতা বরিশাল মাহমুদিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুর রহমানকে একদল আওয়ামী লীগ পিটাচ্ছে। এমন ঘটনা ধর্মপ্রাণ মানুষ ভুলতে পারে না। তাছাড়া মুসলিম দেশে গণজাগরণের নামে যা হয়েছে তার নেতিবাচক প্রতিফলন ঘটেছে বরিশালে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বার্থ উন্নয়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, সাড়ে ৪ বছরে আওয়ামী লীগ ও হিরণ সাহেব বরিশালে ধ্বংসের রাজত্ব চালিয়েছেন। তিনি নগরীর উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছেন। খালগুলো দখল করে নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া যত উন্নয়ন সব করেছেন তার ভাই মামুন। উন্নয়নের নামে সম্পদের পাহাড় গড়ে জনগণের অধিকার হরণ করাই শওকত হোসেন হিরণের পতনের কারণ।
নিজ কেন্দ্রেও হেরেছেন হিরন: নিজ ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রেই হারলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র শওকত হোসেন হিরন। বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের কছে তিনি ৪৩৫ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন।
বিসিসি নির্বাচনের রির্টানিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, নগরীর নূরীয়া মাধ্যমিক স্কুল ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র শওকত হোসেন হিরন। তিনি টেলিভিশন নিয়ে  ৭১৮ ভোট পেয়েছেন। অন্যাদিকে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল পেয়েছেন ১হাজার ১৫৩ ভোট।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ