বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় মানুষ

ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় মানুষ

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের জের ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের পুল এলাকায় দোকান পাট ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুঁড়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে স্থানীয় জনতা পুল এলাকায় রাস্তার পার্শ্ববর্তী দোকান পাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় দায়িত্বরত পুলিশ জনতাকে ভাঙচুরে বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত পুল এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাস্তার বিভিন্ন অংশে বিক্ষুব্ধ জনতার দেওয়া টায়ারের আগুন জ্বলছে।

এদিকে, প্যানেল মেয়র নজরুল হত্যাকাণ্ডের জের ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে কাঁচপুর পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া মহানগরীতে চলাচলকারী যানবাহনগুলোও যাত্রাবাড়ী পেরিয়ে সানারপাড়ের দিকে যেতে পারছে না। এতে এ পথে চলাচলকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। যাত্রীদের অনেকে পায়ে হেঁটে আতঙ্কের মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করছেন।

এদিকে, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম হ্ত্যাকাণ্ডের জের ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সানার পাড়ের মেসার্স শ্যামস ফিলিং স্টেশনের আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত স্টেশনের আগুনও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফিলিং স্টেশনে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি ট্রাক ও বাস ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়।

এলাকাবাসী জানান, এ ফিলিং স্টেশনের মালিক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াসিন। এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে ইয়াসিন জড়িত বলে বিক্ষুব্ধরা অভিযোগ করছেন। আগুন দেওয়ার পর লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে পাম্পটিকে ঘিরে রেখেছেন। বুধবার বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান অবস্থায় নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের লাশ সনাক্ত করে তার পরিবার। এ সময় আরও তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ খবর এলাকার পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই নজরুল-সমর্থকরা রাস্তায় নেমে আসে। এর আগে নজরুলসহ পাঁচ জন অপহরণের ঘটনায় টানা চতুর্থ দিনের মতো ওই এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন নজরুল-সমর্থকরা। তারা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকা থেকে সানারপাড় পর্যন্ত সিমেন্টের খুঁটি ফেলে সড়ক অবরোধ করে।

এছাড়াও এ এলাকায় অন্তত ১৫টি স্পটে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহনে ব্যাপক ভাংচুর করছে বিক্ষুব্ধরা। এরপর থেকেই রাস্তায় লোকজন বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে বিক্ষোভের মাত্রাও।

এর আগে, এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে টানা সাড়ে ঘণ্টা অবরোধের পর দুপর ২টায় তারা সড়ক থেকে চলে যান। কিন্তু লাশ সনাক্তের পর তারা আবার রাজপথে অবস্থান নেন। গত রোববার নিজের মাইক্রোবাসে করে যাওয়ার সময় নজরুলসহ পাঁচজন অপহৃত হন। ওইদিন বিকালেই তার মাইক্রোবাসটি গাজীপুরের ভাওয়াল গড় এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর সোমবার রাতে নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, ইকবাল, হাসু, রাজু ও আনোয়ার। এর মধ্যে হাসু প্যানেল মেয়র নজরুলের চাচা শ্বশুর বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ