বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনবৃটিশ বিরোধী ,স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিক্ষা বিস্তারে আল্লামা হাফেজ বজলুর রহমানের অবদান...

বৃটিশ বিরোধী ,স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিক্ষা বিস্তারে আল্লামা হাফেজ বজলুর রহমানের অবদান অবিস্মরণীয় : পেয়ারুল ইসলাম

আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের প্রাণ পুরুষ উপমহাদেশের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বীর সিপাহসালার  সৈয়দুল আযম আল্লামা হাফেজ হাকিম শাহ মুহাম্মদ বজলুর রহমান  মহাজেরে মক্কী (রহঃ) বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল, বেতাগী রহমানিয়া জামেউল উলুম মাদ্রাসার বার্ষিক সভা এবং বেতাগী আনজুমানে রহমানিয়ার ৩৭ তম বার্ষিক সম্মেলন,২১ শে ফেব্রুয়ারি বুধবার দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বেতাগী আস্তানা শরিফ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। দরবারে বেতাগী আস্তানা শরিফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিক্বত আল্লামা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ (মা.জি.আ) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান প্রবীণ রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকার বহু পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে মানুষের হাতে হাতে আজ মোবাইল শোভা পাচ্ছে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবিত বিকাশের সুফল পাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু অতিমাত্রায় মোবাইল আসক্তির কারণে শিক্ষার্থীরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা দিন দিন বই বিমুখ হয়ে পড়ছে। এটি শুভ লক্ষণ নয়। তাই শিক্ষার্থীদের হাতে খেলনা হিসেবে দামি মোবাইল না দিয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ জ্ঞানের বাহন বই পুস্তক তুলে দিন। সন্তানরা শিক্ষাঙ্গনে ও বাড়িতে ঠিকমতো পড়াশোনা করছে কিনা সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিন। এটিএম পেয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, বেতাগী আস্তানা শরিফের মহাত্মা সাধক বুজুর্গ ব্যক্তিত্বগণ মানুষকে দ্বীন ইসলামের দিকে ডেকেছেন। তাঁরা দুনিয়া তালাশ করেন নি। পার্থিব উন্নতি নয়, মানুষকে দ্বীন ধর্ম আল্লাহ রাসুলমুখী করাই ছিল তাঁদের জীবন মিশন। আমি জেনে অভিভূত হয়েছি এ দরবারের প্রাণপুরুষ আল্লামা হাফেজ বজলুর রহমান (রহ:) ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রসংগঠক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বেতাগী দরবার ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল। দেশের স্বাধীনতার জন্য এ দরবারের সাধকরা দুআ-ফরিয়াদ জানিয়েছিলেন।

বৃটিশ বিরোধী ,স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিক্ষা বিস্তারে আল্লামা হাফেজ বজলুর রহমান ও দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি অত্র মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়নে জেলা পরিষদের পক্ষ হতে সহায়তার আশ্বাস দেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান -১ আবুল কাশেম চিশতী । সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড  ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কার্যনির্বাহী সদস্য ঈসমাইল হক চৌধুরী ফয়সাল ও রাইসুল ইসলাম চৌধুরী, এডভোকেট এ এম মঈনুদ্দিন আহমদ, শাহজাদা দোস্ত মোহাম্মদ কবির,শাহজাদা মোহাম্মদ হাসান । সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ বলেন, বেতাগী দরবার অনন্য আধ্যাত্মিক প্রাণকেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিদিন এ দরবারে দেশের স্বাধীনতার জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে ফরিয়াদ জানানো হতো। যা আজ ইতিহাস স্বীকৃত। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ লেখার জন্য লেখক শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করার দাবি জানান তিনি। মাওলানা আরিফুর রহমান রাশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অতিথি ও আলোচক দিলেন অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলী, আল্লামা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ আল্লামা আবু তাহের, অধ্যক্ষ আল্লামা আহমদ রেজা নকশবন্দী,  অধ্যক্ষ আল্লামা মারেফতুন্নুর, অধ্যক্ষ আল্লামা ইলিয়াস নূরী, পীরজাদা আল্লামা জিয়াউর রহমান আহমদ উল্লাহ, পীরজাদা শাহ আহসান উল্লাহ, পীরজাদা  মাহবুবুর রহমান ছফিউল্লাহ, পীরজাদা মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান (পেঠান শাহ), উপাধ্যক্ষ আল্লামা জসিম উদ্দিন আলকাদেরী, আলহাজ্ব এস.এম.শফি, রাজনীতিবিদ এম.সোলাইমান ফরিদ, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, সংগঠক মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, মাওলানা জসিম উদ্দিন আবেদী, বেতাগী আনজুমানে রহমানিয়ার সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম সিকদার, ও যুগ্ম সাধারণসম্পাদক  এস এম রেজাউল করিম বাবর, মাওলানা আবদুল হাই, গাজী  জামাল উদ্দিন,  মাওলানা করিম উদ্দিন নূরী, মাওলানা শায়ের মুহাম্মদ ইসহাক, মাওলানা মাহফুজুল হক আলকাদেরী, মাওলানা আবু জাফর, মাওলানা দিদারুল আলম চৌধুরী, মাওলানা আবদুস শাকুর, মাওলানা নাজিম উদ্দিন, আলমগীর ইসলাম বঈদী, আলহাজ্ব এম এ কুদ্দুস, মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ জুনাইদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম মাদ্রাসার ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বই, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন। এটিএম পেয়ারুল ইসলামের হাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে লেখা লেখক-গবেষক শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের গ্রন্থগুলো তুলে দেন সভাপতি মাওলানা আশরফ শাহ ও মাওলানা জিয়াউর রহমান আহমদ উল্লাহ। মিলাদ কিয়াম শেষে দেশ জাতির শান্তি সমৃদ্ধি কল্যাণ এবং ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন পীরে তরিকত আল্লামা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ। সম্মেলনে দরবারের বহু আশেক ভক্ত জনতা অংশগ্রহণ করেন। পরে সবার মাঝে তবরুক পরিবেশিত হয়।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ