শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েশিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল

রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের সব সরকার অনুমোদিত ও অননুমোদিত হাসপাতাল ক্লিনিকের তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

জড়িত দুই চিকিৎসক সাইদ সাব্বির ও তাসনুভা মেহেরজাবিন এবং হাসপাতালের পরিচালক বশির মোল্লাকে গ্রেফতারের দাবি জানান আয়ানের বাবা।

এদিকে গতকাল ১৪ জানুয়ারি রাতে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিককালে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমেদের (৫+ বছর) মৃত্যুতে তার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধিদফতরের পরিচালকের (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) নেতৃত্বে ১০ জানুয়ারি হাসপাতালটি পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রদত্ত লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হয়।
এছাড়া দফতরের অনলাইন ডাটাবেজ পর্যালোচনা এবং পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় যে,

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে কোন প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে নিবন্ধন/লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য কখনোই অনলাইনে আবেদন করেনি। প্রতিষ্ঠানটি কোনো প্রকার আইনানুগ নিবন্ধন অথবা লাইসেন্স ছাড়াই চিকিৎসা সেবা নির্মাণাধীন ভবনে পরিচালনা করে আসছে। যা সরকারের প্রচলিত আইনের পরিপন্থি। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশে এ আদেশ জারি করা হলো।

জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর খতনা করানোর জন্য আয়ানকে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার অভিভাবক। সকাল নয়টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। তবে অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ (জেনারেল) দিয়ে চিকিৎসক আয়ানের খতনা করান বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা থানায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাদী হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক, অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন পরিচালককে আসামি করে মামলা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৪ জানুয়ারি) শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে শিশু আয়ানের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল ও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

সুপ্রিম কোটের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। পরে শিশু আয়ানের বাবা রিটে পক্ষভুক্ত হন। নতুন করে রিটে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি দাখিল করা হয়।

প্রসঙ্গত: গত ৩১ ডিসেম্বর খতনা করানোর জন্য আয়ানকে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার অভিভাবক। সকাল নয়টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। তবে অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ (জেনারেল) দিয়ে চিকিৎসক আয়ানের খতনা করান বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা থানায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাদী হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক, অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন পরিচালককে আসামি করে মামলা করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ