শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিন৮২ গাড়ি ধ্বংস করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস

৮২ গাড়ি ধ্বংস করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস

শুল্ক ফাঁকির চেষ্টার পাশাপাশি মামলাসহ নানা জটিলতায় আটকে থাকা ৮২টি গাড়ি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। চলাচল অনুপযোগী বলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে প্রতিবেদন পেয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের নিলাম শেডের সরেজমিন চিত্র বলছে, পুরো শেডজুড়ে জমে আছে চলাচল অনুপযোগী ভাঙা গাড়ির স্তুপ। অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের শেডে এসব গাড়ি রাখতে রাজি না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে এই শেডে এনে রাখা হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতায় আটকে ছিল এ ধরনের ১২১টি গাড়ির ভাগ্য। তবে শেষ পর্যন্ত এসব গাড়ি একেবারেই চলাচল অনুপযোগী দাবি করে ধ্বংসের সুপারিশ করেছে বিআরটিএ ।

 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার ব্যারিষ্টার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, সুপারিশ অনুযায়ী কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এই গাড়িগুলোকে স্ক্র‌্যাপ করবে। তাছাড়া স্ক্র্যাপ করা পণ্য নিলামে বিক্রির জন্য কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে।

বিআরটিএ থেকে সুপারিশ আসলেও মামলার কারণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া ৩৯টি গাড়ি নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব গাড়ির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কেননা, বার বার নিলাম ডেকেও গাড়িগুলো বিক্রি করা যায়নি।

অবশ্য কাস্টম কর্তৃপক্ষ ভারী যন্ত্র দিয়ে গাড়িগুলো ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নিলেও নিলাম ব্যবসায়ীদের দাবি ভিন্ন। তারা সুপারিশ করেছেন গাড়ির পার্টস পৃথক করে কেটে বিক্রি করার। এ নিয়ে কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফেরদৌস আলম বলেন, ‘এই গাড়িগুলো নিয়ে কাস্টমসের কিছু অবহেলা আছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু অবহেলা আছে। তাদের অবহেলার কারণেই এই গাড়িগুলো দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।

 কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারী যন্ত্র দিয়ে গাড়িগুলো ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আমরা বলছি সেটি দুই ভাগে কেটে নিলাম করা হোক। এতে গাড়ির পার্টসগুলো দেশের বাজার বিক্রি করা যাবে। 

গাড়ি আমদানির ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় করার বিধান থাকলেও নিয়ম না মানায় কাস্টমসের ফাঁদে আটকা পড়ে এসব গাড়ি। তাছাড়া শুধু ধ্বংসের পথে যাওয়া এই ১২১টি গাড়ি নয়, আরও ৪৪৬টি বিলাসবহুল গাড়ি বন্দরের শেডে এখনও নিলামের অপেক্ষায় রয়েছে। গত কয়েক বছরে উপযুক্ত ক্রেতা না পাওয়ায় গাড়িগুলোও ক্রমশ অচল হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কাস্টমস এত দেরিতে অনুমতি দেয় যে গাড়িগুলো আর চালানোর মতো অবস্থায় থাকে না। এতে নিলামেও তেমন একটা দাম পাওয়া যায় না। এতে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় সরকার।

প্রসঙ্গত, ধ্বংস করতে যাওয়া গাড়ির মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল বাস, ট্রাক, জীপ, পিক-আপ, পাজেরো এবং প্রাইভেট কার। 

একেবারে চলাচলের অনুপযোগী ১২১টি গাড়ির মধ্যে ৮২টি ধ্বংস করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হয় তো এগুলোর একটি সমাধান হচ্ছে, কিন্তু এ ধরনের শত শত কোটি টাকার গাড়ি আটকে আছে বন্দর ও কাস্টমসে। মামলার পাশাপাশি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দ্রুত নিরসন করা হলে এসব গাড়ি থেকে শত কোটি টাকার রাজস্ব পাবে সরকার। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ