শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......‘দুর্নীতি দমন কমিশন বিল-২০১৩’ সংসদে পাস

‘দুর্নীতি দমন কমিশন বিল-২০১৩’ সংসদে পাস

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

অনুমতি ছাড়া এখন আর সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা যাবে না। ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) বিল-২০১৩’ সংসদে পাস হওয়ায় এ বিধান নিশ্চিত হল। বিলটি পাস হওয়ার আগে সরকারি দলের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির এ সংক্রান্ত সংশোধনী দিলে মতিয়া চৌধুরী তা গ্রহণ করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম সুজন এবং জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর কয়েকটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়। সরকারের শেষ সময়ে বহুল আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) বিল’-২০১৩ সংসদে পাস হলো।

দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পর নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে ১০ নভেম্বর রোববার বিলটি পাস হয়। ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে সংসদ কার্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বিলটি উত্থাপন করেন।
এর আগে ২০০৪ সালে প্রণীত এই আইনিটি সংশোধনের জন্য ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে বিল আনা হয়। পরে সংসদীয় কমিটি বিলটিতে ১৩ টি সংশোধনী আনেন। গত বছর দুর্নীতি দমন কমিশন আইন (সংশোধন) বিলটি পাস হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুমোদন ছাড়া দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনো মামলা আদালত আমলে নেবে না। বিলে দুদক কমিশনারদের মেয়াদ চার বছরের জায়গায় পাঁচ বছর করা হয়েছে।
২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন মতিয়া চৌধুরী। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে রিপোর্ট দেয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এ বিলের প্রতিবেদন চূড়ান্তে সংসদীয় কমিটি অভিজ্ঞতার জন্য অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করে দেশগুলোর এ সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা করে। এছাড়া কমিটি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মত বিনিময় করে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয়।
সংসদে উত্থপিত বিলে সরকারি কর্মচারী, জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বিরুদ্ধে সরকারের অনুমোদন ছাড়া দুর্নীতির মামলা দায়ের করা যাবেনা-এমন বিধান থাকলেও পরে সংসদীয় কমিটি সেটা বাতিল করে।বিলে বলা হয়েছে, আদালতে অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে দুদকের অনুমোদন পত্রের কপিও দাখিল করতে হবে। দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধ আমলযোগ্য, এবং অ-জামিনযোগ্য রাখার বিধান রাখা হয়েছে বিলে।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে কিংবা অনিশ্চিত তথ্য দিয়ে কোনো তদন্ত বা বিচার পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারদণ্ড ভোগ করতে হবে। দুদকের কেনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রেও একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।তথ্য প্রদানকারী নিজের পরিচয় গোপন রাখার বিধান রয়েছে বিলে। এছাড়া অভিযোগকারীর পরিচয় প্রকাশে বাধ্য করা যাবে না বলেও বলা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ১২০ কার্ দিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। যদি কোনো কর্মকর্তা এটা করতে ব্যর্থ হলে আবেদন সাপেক্ষে অনধিক ৬০ কার্যদিবস বাড়ানো যাবে। এরপরেও ওই কর্মকর্তা ব্যর্থ হলে নতুন করে অন্যকোনো কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।ব্যর্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা আছে, কমিশন নিজে তাদের অপরাধ তদন্ত করতে পারবে না। দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপরাধ তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থাকে দিতে হবে। দুদক সরকারের কাছে তথ্য চেয়ে না পেলে নিজ উদ্যোগে তদন্ত করতে পারবে।
বিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে আরও শক্তিশালী, জবাবদিহিতাসম্পন্ন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪- এর অধিকতর সংশোধনের উদ্দেশে বিলটি আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনের মাধ্যমে দুদকের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ