বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......মুক্ত জল্লাদ শাহজাহান

মুক্ত জল্লাদ শাহজাহান

২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানা সেই জল্লাদ শাহজাহানের বয়স এখন ৭৩ বছর। তার আত্মীয়-স্বজন বলতে তেমন কেউ নেই। ব্যক্তিগত জীবনেও অবিবাহিত তিনি। শোনা যাচ্ছে, তার এক বোন ঢাকায় থাকেন। তার সঙ্গেও যোগাযোগ নেই।  তাহলে এই বৃদ্ধ বয়সে কীভাবে চলবেন তিনি? কার আশ্রয়ে থাকবেন তিনি?

কারাগার থেকে একটি সূত্র জানায়, ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানার পাশাপাশি (লিভার টানা) যেহেতু জল্লাদ শাজাহান সুশৃংখলভাবে কারাগারে অনেক কাজ করেছেন। তাই কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, তাহলে কারাগারের ভেতরেই তাকে বাগানে অথবা অন্য কোনো কাজ দেওয়া যেতে পারে। রোববার (১৮ জুন) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে সূত্র এইসব তথ্য জানান।

কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় জল্লাদ শাহজাহানের সঙ্গে কেউ দেখা করতে এসেছে কিনা এই পর্যন্ত আমাদের নজরে পড়েনি। প্রথম দিকে হয়তো বা এসেছিল। জল্লাদ শাজাহান যদি চায় আর কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে তাকে কারাগারের বাগানসহ কিছু জায়গা আছে কাজে লাগানো যায়। তাহলে তারা তাকে সেই কাজ দিতে পারে। কারণ তিনি কারাগারে ভেতরে অনেক কাজ করেছেন। এসব কারণে কর্তৃপক্ষের কাছে তার কাজ চাওয়ার একটা অধিকারও সৃষ্টি হয়েছে।

কারাগারের তথ্যানুযায়ী, জল্লাদ শাজাহান ২০০১ সাল হতে এ পর্যন্ত তিনি ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন। যার মধ্যে ৬ জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, ৪ জন যুদ্ধাপরাধী, ২ জন জেএমবি ও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামি।

‘জল্লাদ’ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। তিনি নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। কারাগারে শাহজাহানের কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯/এ। মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান জল্লাদ ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহজাহান ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম গ্রেপ্তার হয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে আসেন। দুটি মামলায় তার ৪২ বছরের সাজা হয়েছিল। পাশাপাশি সেসব মামলায় জরিমানা হয়েছিল পাঁচ হাজার করে ১০ হাজার টাকা।

কিন্তু কারাগারের মধ্যে ভালো কাজ এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে জল্লাদের দায়িত্ব পালনের জন্য তার সাজার মেয়াদ ১০ বছর মওকুফ (রেয়াত) করা হয়। পাশাপাশি শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়।

ফলে দীর্ঘ ৩১ বছর ছয় মাস দুই দিন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন কাটানোর পর আজ তিনি মুক্ত হলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ