সোমবার, মে ৬, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনঅর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রামগড় স্থলবন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম :এ টি...

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রামগড় স্থলবন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম :এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেছেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রামগড় স্থলবন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। যেকারণে দেশের অর্থনৈতিক বিবেচনায় রামগড় স্থলবন্দর বেনাপোলের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

স্বপ্নের রামগড় স্থলবন্দর চালুর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা এমপি ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপিকে চট্টগ্রামের সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপনার্থে আজ(২৩ মে) মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।FB_IMG_1684846569187
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জি: আব্দুল খালেক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার চট্টগ্রামে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যা ভবিষ্যতে চট্টগ্রামকে আরও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।রামগড় স্থলবন্দর চালু হলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে ভারতের সাতটি রাজ্য নেপাল, ভোটানসহ অন্যান্য রাষ্ট্র। চট্টগ্রাম থেকে বেনাপোল যেতে অনেক সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু রামগড় চালু হলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি রপ্তানি হয় তা আরও কম সময়ে ও খরচে আমদানি করা সম্ভব হবে। যা অর্থনৈতিক বিবেচনায় সারা দেশের জন্য ইতিবাচক। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রাম বন্দর ও মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দরের মত সুফল কাজে লাগাতে রামগড় অধিক ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, রামগড় স্থলবন্দরকে কেন্দ্র করে মীরসরাই-ফটিকছড়ি সহ উত্তর চট্টগ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে ফেনী নদীর উপর নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১। যা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে রামগড়কে সংযুক্ত করেছে।
এদিকে, আগামীকাল (২৪ মে) যে প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে সেটি বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প যার দৈর্ঘ্য ৩৮ কি.মি। এতে থাকবে ২৪৯.২০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ৯টি ব্রীজ ও ১০৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে ২৩টি সেতু। উল্লেখ্য, এতে ২৪টি ব্রীজ ও ২৪টি সেতু ইতিপূর্বে জাইকা কর্তৃক নির্মিত হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ১১০৭.১২ কোটি টাকা যার মধ্যে ইন্ডিয়ান স্টেট ক্রেডিটের আওতায় অর্থাৎ ভারত সরকার ঋণ হিসাবে দিচ্ছে ৫৯৪.০৭ কোটি টাকা।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, আমার স্বপ্ন দেখা বহু ঘাম ঝরানো দীর্ঘ প্রচেষ্টার রামগড় স্থলবন্দর শীঘ্রই চালু হবে ইনশাআল্লাহ। স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৯১-৯২ সালে তিনি ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ভারতের সাথে স্থলবাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ভারতের সাথে সীমান্ত থাকা স্বত্তে¡ও এখানে কোন স্থলবন্দর নেই। ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে সরাসরি আবেদন করেন তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম জেলার সাথে বাংলাদেশের রামগড়-ফটিকছড়ি উপজেলার সীমান্তে স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার জন্য।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের মালামাল পরিবহনে অক্সিজেন-হাটহাজারী-নাজিরহাট-হেঁয়াকো পানুয়া বিদ্যমান সড়ক ৪ লেইনে প্রশস্ত করে ঢাকা-চট্টগ্রাম বিকল্প জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ ও নাজিরহাট রেলষ্টেশন হতে হেঁয়াকো-পানুয়া -রামগড় পর্যন্ত ৩৫ কি.মি. রেললাইন বর্ধিত করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের আবেদনে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও যুক্তি উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগ মন্ত্রীকে বুঝাতে সক্ষম হন সড়ক ও রেলপথে ৯০ কি.মি. দূরত্বে দেড় ঘন্টা সময়ে হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর হতে ভারতের সাব্রæম জেলার সীমান্তে পৌঁছানো সম্ভব।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যে উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দেন। স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হাটহাজারী-ফটিকছড়ি উপজেলায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ১) গহিরা-বিবিরহাট সড়ক উন্নয়ন (দৈর্ঘ্য ২৪ কি.মি., ব্যয় ৯০.৩১ কোটি টাকা, ২টি ব্রিজ, ৩২টি কালভার্ট সম্বলিত)।
২) পেলাগাজী-হেয়াঁকো সড়ক (দৈর্ঘ্য ২৭.৩ কি.মি., ব্যয় ৩১ কোটি টাকা, ১১টি ব্রীজ, ৩৭টি কালভার্ট)
৩) মাইজভান্ডার-নাজিরহাট সড়ক (দৈর্ঘ্য ৪.৫ কি.মি., ব্যয় ৩৭ কোটি টাকা, ৩টি ব্রীজ ও ২টি কালভার্ট সম্বলিত)
৪) হাটহাজারী- ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি সড়ক (দৈর্ঘ্য ৩২ কি.মি., ব্যয় ৩৮৬.৮২ কোটি টাকা, ৩৭টি কালভার্ট সম্বলিত)
স্থল বন্দরের পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে করণীয় :
পেয়ারুল ইসলাম বলেন, স্থলবন্দর হতে সর্বোচ্চ ও কার্যকর সুবিধা পেতে চাইলে জরুরি ভিত্তিতে নিচের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা দরকারঃ ১) মীরসরাই সদর-নারায়নহাট সড়ক ৪ লেইনে উন্নীত করা। ২) নাজিরহাট-সুয়াবিল-হারুয়ালছড়ি-কাজীরহাট এলজিইডি সড়ক সওজের আওতায় এনে অধিগ্রহণ করে ৪ লেইনে উন্নীত করা ৩) নাাজিরহাট পুরাতন ব্রীজ ভেঙ্গে নতুনভাবে করা। ৪) নাজিরহাট রেললাইনকে আধুনিকীকরণ ও প্রশস্তকরণ এবং বর্ধিত ৩৫কি.মি. রেললাইন নতুন স্থাপন করে রামগড় পর্যন্ত সংযুক্ত করা। ৫) রামগড় স্থলবন্দর হতে ভারতের ত্রিপুরার উপর দিয়ে সিলেটের মাধবপুর পর্যন্ত নরসিংদী মৌলভীবাজার সড়কের সাথে সংযুক্ত করা যাতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও সিলেট বেল্টে যাতায়াতের অকল্পনীয় সুবিধা পাওয়া যাবে। ৬) হাটহাজারী বাজারের উপর দীর্ঘ ফ্লাইওভার নির্মাণ অথবা বাইপাস সড়ক নির্মাণ।
আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো: হারুনের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল আলম, ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হোসাইন মো: আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ ফিরোজ, সাদাত আনোয়ার সাদী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, পূর্বকোণের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম ইফতেখারুল ইসলাম, এস এম কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য বোরহান উদ্দিন মো: এমরান, দিলোয়ারা ইউসুফ, এইচ এম আলী আবরাহা দুলাল, ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমদ, লেলাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফটিকছড়ি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীন, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: ওহিদুল আলম, বক্তপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক-ই-আজম, নানুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: শফিউল আজম, রোসাংগিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শোয়াইব আল-সালেহিন, তামাকুমন্ডি বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল, মো: জায়নুল আবেদীন, শহিদুল ইসলাম পিন্টু, হাবিব সাজ্জাদ, মাসুদ পারভেজ, রাইসুল ইসলাম চৌধুরী এমিল, ইমরান মুহুরী, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, গোলাম সরোয়ার সুরুজ, জাবেদ জাহাঙ্গীর টুটুল, মুহাম্মদ রিয়াজুর রহমান চৌধুরী, রাসেদুল করিম রাসু।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ