শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদটপকোটি টাকার বিনিময়ে আমার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে জাপার টিকিট

কোটি টাকার বিনিময়ে আমার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে জাপার টিকিট

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে। দলের পৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের কাছে এই দাবি জানান জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।

আজ শুক্রবার সিলেট নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুর বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়-টাকার কাছে ফিকে হয়ে পড়েছে একজন রাজনীতিকের স্বপ্ন। এবার সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। প্রায় কোটি টাকার বিনিময়ে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির টিকিট।

মাহবুবুর বলেন, ‘সিলেট জেলা জাপার সাবেক সহসভাপতি হিসেবে অনেক দিন দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৮ সালে সিলেট-১ আসন থেকে জাপার প্রার্থী হিসেবে লাঙল প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচন করেছি। বিগত দিনে সিলেটের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছি। আর সেই তাগিদে এবার সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে এক বছর আগে থেকেই সিলেটে কার্যক্রম শুরু করি।

জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বোর্ড থেকে ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন বলে জানান মাহবুবুর। তিনি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় জানানো হয় ৬ মে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। কিন্তু হঠাৎ একদিন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে জানতে পারি ৪ মে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। বিষয়টি জানার পর আমি দলীয় দপ্তরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে বারবার দলের চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

মাহবুবুর বলেন, ‘একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত কয়েকজন নেতা কর্মী আমাকে জানান-দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় নজরুল ইসলাম বাবুলকে সিলেট সিটি নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এ বিষয়টি জানার পর আমি ও সঙ্গে থাকা সিলেটের নেতা কর্মীরা হতাশ হই।

সিলেট সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রচার শুরু করেন বলে জানান মাহবুবুর। তিনি বলেন, ‘তাঁরা (কাদের ও মুজিবুল) আমাকে মাঠে কাজ করার পাশাপাশি নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুতি নিতে বলেন। তাঁদের দেওয়া আশ্বাসে আমি সিলেটে এসে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও বৈঠক করি। বিভিন্ন এলাকায় প্রচারকাজও চালাই।

মাহবুবুর অভিযোগ করে বলেন, ‘সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সাবেক সিলেট মহানগর তাঁতীদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লাঙলের মনোনয়নপত্র কিনে এনেছেন। কালো টাকার এই মালিকের কাছে দলের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও ব্যর্থ হলাম। আমার সঙ্গে যে অন্যায়, অবিচার করা হয়েছে সিলেটবাসী এর বিচার করবে বলে আমার বিশ্বাস।

বিতর্কিত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে সিলেট জাতীয় পার্টির অবস্থান দুর্বল হচ্ছে উল্লেখ করে মাহবুবুর বলেন, ‘সিলেটে পল্লীবন্ধু হোসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতেগড়া জাতীয় পার্টির অবস্থান আরও দৃঢ় করতে ত্যাগী নেতা–কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। বিশেষ করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন তথা মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করতে হবে। আর এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য দলের পৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব মইন, মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সহসভাপতি মৌলভি আবুল কালাম দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসফ সেলু ও মুরাদ আহমদ শাহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ, সিলেট সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি সাদেক আহমদ সুয়েব, মহানগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সহসভাপতি রহমত উল্লাহ মাস্টার প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ