শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদটপবাংলাদেশের মূলখাতগুলোতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশের মূলখাতগুলোতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশের মূলখাতগুলোতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তাই সেই ট্রেন মিস না করতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী। রোববার (১২ মার্চ) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান।

দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩’। দিনের প্রথম প্লেনারি সেশন শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুরে। বাংলাদেশের মূল খাতগুলোতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সেগুলো তুলে ধরা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শুল্ক ছাড়সহ বিভিন্ন নীতিগত সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। তাই এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানান টিপু মুনশি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহের কথা জানান যুক্তরাজ্য, কোরিয়া এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বিনিয়োগকারীরা। তবে এর জন্য নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা এবং বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতি চান তারা।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ। আপনারা নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন।’

‘বাংলাদেশের মূলখাতগুলোতে বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক এই সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়কমন্ত্রী অ্যান-ম্যারি ট্রেভেলিয়ান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সংগঠনটির সাবেক সভাপতি একে আজাদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াঙ্গুন করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সুং, আসিয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক সিইও তাকেশি মামিয়াসহ আরও কয়েকজন বিদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অংশ নেন।

এদিন বিজনেস সামিটে পোশাক ও বস্ত্র খাত, খাদ্যপণ্য, অবকাঠামো, ডিজিটাল ইকোনমি, এনার্জি সিকিউরিটি, কৃষি খাতসহ ৯টি বিষয়ে প্লেনারি এবং পেরালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং বিদেশি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা অংশ নেন।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিজনেস সামিটে দেশ-বিদেশের অনেক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। আমরা বিদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে আমাদের দেশের সক্ষমতা ও বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই।

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সামিটের প্রথম দিনে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চারটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হয়েছে। আজ সামিটের দ্বিতীয় দিনে বেশ কিছু প্লেনারি ও পেরালাল সেশন থেকে কিছু সমঝোতা স্মারক হতে পারে বলে আশা করছি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর নয়, আমরা আমাদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরতেই এই সামিটের আয়োজন করেছি। এর আগে, শনিবার (১১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট- ২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধি, বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেন।

তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন সোমবার (১৩ মার্চ) পর্যন্ত চলবে। সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে ১৭টি সেমিনার ও ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ৭টি দেশের মন্ত্রী এবং ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী নেতারা সম্মেলনে অংশ নেবেন।

এরইমধ্যে অনেকেই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এই সামিটের মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন, যোগাযোগ, পোশাক ও বস্ত্র, হালকা প্রকৌশল, কৃষি ও স্বাস্থ্য-শিক্ষার মতো খাতে বিপুল বিদেশি বিনিয়োগের আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ