মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়দলমত নির্বিশেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছে আ. লীগ: প্রধানমন্ত্রী

দলমত নির্বিশেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছে আ. লীগ: প্রধানমন্ত্রী

একটা সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে দলমত নির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানানো নিজেদের কর্তব্য বলে মনে করে আওয়ামী লীগ, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ ফেব্রুয়ারি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ‘বীর নিবাস’র চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে অবহেলিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের সম্মান ফিরিয়ে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। অসচ্ছল প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করে দেয়া হবে ৩০ হাজার ঘর।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান দেয়া হচ্ছে। দলমত নির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানানো হচ্ছে এবং এটিকে নিজেদের কর্তব্য বলে মনে করে আওয়ামী লীগ।

বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন; তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেন তিনি। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, এমনকি নির্যাতিত মা-বোনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বিদেশ থেকে চিকিৎসক-নার্স নিয়ে আসেন এবং তাদের পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা করেন।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন; তাই দেশে ফিরে তাদের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেন। আমাদের এ যুদ্ধটা জনযুদ্ধ ছিল, এখানে যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং আমাদের সশস্ত্রবাহিনী, পুলিশ এবং আনসার বাহিনী ছাড়াও আরও যারা ছিলেন, তারা এ দেশের আপামর জনসাধারণ ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কথায় যার যা ছিল তাই নিয়েই কিন্তু শত্রুর মোকাবিলা করেছিলেন তারা। এই ধরনের যুদ্ধ কিন্তু কমই দেখা গেছে, যেটা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে এ দেশের মানুষ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ফিরে এসে তাদের কল্যাণে একটি ট্রাস্ট গঠন করে দেন বঙ্গবন্ধু। ওই সময় যেসব শিল্প কলকারখানা পাকিস্তানিদের মালিকানায় ছিল, তারা ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল, সেগুলো সরকারিকরণ না করে তার মধ্যে থেকে ৩২টি শিল্পকল কারখানা ও আরও অনেক প্রতিষ্ঠান দিয়ে দেন তাদের। কারণ এর থেকে যে আয় হবে তা দিয়ে যেন মুক্তিযোদ্ধারা চলতে পারেন তার ব্যবস্থা করে দিয়ে যান তিনি। কিন্তু দুভার্গ্যজনক হলেও সত্য বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেই সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অলাভজনক হয়ে যায়, লুটপাটের আখড়া হয়ে দাঁড়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা আসলে যে মুক্তিযোদ্ধা, এই কথাটি  মানুষের মাঝ থেকে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা মারা গেলে তারা যেন সম্মান পান, সেই ব্যবস্থা করেছি। জাতির পিতা যেমন তাদের সন্তানদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, নির্যাতিত মা-বোনদের জন্য একটা কোটা সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছিলেন, আমরা সরকারে আসার পর শুধু মুক্তিযোদ্ধা না, তাদের সন্তান ও বংশপরম্পরায় যারা আসবে তারাও যেন প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রায় সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। ন্যূনতম ভাতা এখন ২০ হাজার টাকা করেছি। তা ছাড়া অনেকের ঘর নেই, বাড়ি নেই, মানবেতর জীবনযাপন করছে; এটা আমাদের জন্য লজ্জার ব্যাপার। একজন মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করবে বা রিকশা চালাবে অত্যন্ত আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা যখন ক্ষমতায় তখন এটা হতে পারে না। সে জন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করেছি, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা এবং তাদের জন্য বৈশাখী ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বীর নিবাস হস্তান্তর করা হয়। এ বছর ৩০ হাজার বীর নিবাস তৈরি করে দেয়া হবে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ