বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআওয়ামী লীগ মানুষের বাকশক্তি হরণ করছে: আমির খসরু

আওয়ামী লীগ মানুষের বাকশক্তি হরণ করছে: আমির খসরু

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের রক্ষীবাহিনীতে পরিণত হয়েছেন, তাদের ভালো হবে না। তিনি বলেন, আপনাদের দায়িত্ব নাগরিকদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, আপনারা মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছেন। যদি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে চান, তাহলে আপনাদের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

বুধবার বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরীর নাসিমন ভবনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নূর আহমেদ সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন আহমদ, হারুনুর রশিদ। সমাবেশে চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক জেলার সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে আমীর খসরু বলেন, ‘যা হয়েছে, হয়েছে। আপনাদের অনুরোধ করবো— জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না, মানুষের ক্রোধের মুখে পড়বেন না।প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতিও অভিন্ন বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করছেন, তাদের বলছি— দেয়ালের লিখন পড়ুন। কারণ দেয়ালের লিখন পড়তে না পারলে আপনাদেরও ভালো হবে না। সমাবেশে আমির খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী হয়ে গেছে। জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই তাদের। সরকারি কিছু কর্মকর্তা, দুর্নীতিবাজ কিছু ব্যবসায়ীর আশ্রয়ের ওপর নির্ভর করছে তারা। কিন্তু তারা এ সরকারকে বাঁচাতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশে বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল, ব্যাংক লুটপাট করেছিল। এখন সেই কায়দায় মানুষের বাকশক্তি হরণ করছে, লুটপাট চালাচ্ছে, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে, গণতন্ত্র হরণ করছে। তারা ব্যাংক ডাকাতি করছে। ব্যাংক খালি হয়ে গেছে। ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এসব টাকা দুবাই, কানাডা, লন্ডনে টাকা পাচার করে দিয়েছে তারা। ব্যবসায়ীরা ডলারের অভাবে পণ্য আমদানি করতে পারছেন না, তাই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তবে তাদের কিন্তু কোনো সমস্য নেই।

খসরু বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) নাকি বেহেশতে আছে। আগামীর বেহেশত তাদের দরকার নেই। কিন্তু বিএনপির যারা নির্যাতিত হচ্ছে, তারা কোথায় যাবে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা চেষ্টা করছে, পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে। কিন্তু তারা পারে নাই, কারণ তাদের নেতাকর্মীরা লুটপাটে ব্যস্ত, ভোট চুরিতে মনোযোগী। তারা জায়গা দখল, টেন্ডার দখলে নেমেছে। তারা কীভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে?

গত ১৬ জানুয়ারি বিএনপির একটি বিক্ষোভ সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। ফলে বুধবারের সমাবেশে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে ধর-পাকড়ের আতঙ্ক বিরাজ করছিল। কিন্তু সমাবেশকে ঘিরে কাজীর দেউরী এলাকায় বিপুল সদস্য মোতায়েন থাকলেও তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। নেতাকর্মীর ভিড়ে নূর আহমদ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। সমাবেশ চলাকালে আগের ঘটনায় দায়ের করা চার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার খবর আসে। এতে নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাসে ভাসেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ