বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনবাকলিয়া এক্সেস রোড অবশেষে চালু হচ্ছে মার্চে

বাকলিয়া এক্সেস রোড অবশেষে চালু হচ্ছে মার্চে

চট্টগ্রাম শহরের আলোচিত সড়ক বাকলিয়া এক্সেস রোড অবশেষে চালু হচ্ছে। আগামী মার্চে সড়কটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। বিতর্কিত দশতলা ভবনটি অক্ষত রেখে প্রকল্পের অ্যালাইমেন্ট পরিবর্তন করে নির্মাণ করা হচ্ছে সড়কটি। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সূত্র জানিয়েছে, শহরের ঘনবসতি ও ব্যস্ততম এলাকা চন্দনপুরা থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত ব্রিজের সন্নিকট পর্যন্ত ১.৫৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল সিডিএ। মানুষের চলাচল সহজ করতে গ্রহণ করা হয় এই প্রকল্প। ২০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আন্দরকিল্লা থেকে চকবাজার পর্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য দক্ষিণমুখী যাতায়াত সহজ হবে। আন্দরকিল্লা ও সন্নিহিত অঞ্চল থেকে সহজে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুতে যাওয়া যাবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের ঘুরপথ সহজ হয়ে যাওয়ায় অনেকে প্রকল্পটির অগ্রগতির ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ রাখছিলেন। ৪১৭ দশমিক ৫০ কাঠা জমি অধিগ্রহণ, রাস্তার দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ, ৪টি বক্স কালভার্ট, ১০ ক্রস কালভার্ট, ২০০টি স্ট্রিট লাইট স্থাপনসহ প্রকল্পটি একনেকসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুমোদনের পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হয়।

 ২০২০ সালের জুনে রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে বাকলিয়া ডিসি রোডে মৌসুমী আবাসিক এলাকার ১০ তলা একটি ভবন নিয়ে বেকায়দায় পড়ে সিডিএ। রাস্তার অ্যালাইমেন্টের উপর ১০ তলা ভবনটি নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল সিডিএ থেকে। ফলে সিডিএ নিজেদের অনুমোদন দেয়া ভবনটি আর উচ্ছেদ করতে পারছিল না। এতে করে রাস্তার দুদিকে কাজ প্রায় শেষ হলেও মাঝের কয়েকশ মিটার কাজ আটকে যায়। অনুমোদিত ভবনটি ভাঙতে হলে সিডিএকে ভবনের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে ১১ কোটি টাকা। ভবনটি ভেঙে রাস্তা থেকে সব সরিয়ে নিতে খরচ হবে আরো ৪ কোটি টাকা। আবার ভবনের অনুমোদন কী করে দেয়া হলো তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সবকিছু মিলে বড় অংকের চাপে পড়ে সিডিএ প্রকল্প ব্যয় ১৫ কোটি টাকা বাড়াতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চায়।

অবশ্য ওই সময় মন্ত্রণালয় বাড়তি ব্যয় অনুমোদন না দিয়ে বিকল্প পন্থা খুঁজে দেখার পরামর্শ দেয়। মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। ওই কমিটির সুপারিশে গঠন করা হয় টেকনিক্যাল কমিটি। টেকনিক্যাল কমিটি ভবনটি না ভেঙে সড়কের নকশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেয়। নানা প্রক্রিয়া ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে একনেক সভায় ভবনটি মাঝখানে রেখে রাস্তাটির অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের নকশা অনুমোদন করা হয়। এতে প্রকল্প ব্যয় প্রায় ১২ কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়। একনেক বাড়তি ব্যয় অনুমোদন করে।

একনেকের অনুমোদনসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর ১০ তলা ভবনটিকে সড়কের মাঝখানে রেখে দুদিকে রাস্তা বের করা হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মার্চের মধ্যে রাস্তাটির সব কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, রাস্তা নির্মাণের কাজ দ্রুত চলছে।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আগামী মার্চে যান চলাচলের জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এখন ফিনিশিং ওয়ার্ক চলছে। সড়কটি উন্মুক্ত হলে শহরের যান চলাচলের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে আন্দরকিল্লা থেকে নিউ মার্কেট, স্টেশন রোডসহ সন্নিহিত এলাকার যান চলাচলে গতি আসবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ