কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কিডনি রোগী ও স্বজনেরা। এর আগে চমেক হাসপাতালের স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গত শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন তারা।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ঢাকার জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও চমেক হাসপাতালে ডায়ালাইসিসসহ কিডনি রোগীদের বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস প্রাইভেট লিমিটেড। ২০২২ সাল পর্যন্ত রোগী প্রতি ডায়ালাইসিসের জন্য সরকারিভাবে প্রতি সেশনে ৫১০ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৭৯৫ টাকা করে নেয়া হতো। ২০২৩ সালের প্রথম দিন থেকে সেটা বেড়ে সরকারিভাবে ৫৩৫ ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৯৩৫ টাকা হয়েছে।
হাটহাজারী থেকে আসা কিডনি রোগী ইন্তেখাব উদ্দিন বলেন, গত এক বছর ধরে আমি কিডনি রোগে ভুগছি। এর মধ্যে তিন মাস যাবত টানা ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। এখন আমি সম্পূর্ণ কর্ম অক্ষম একজন মানুষ। এই সময়ে হঠাৎ করে ডায়ালাইসিস ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে কষ্টে পড়ে গেলাম। জমি বিক্রি করে ও আত্মীয়–স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা নিয়ে কোনোমতে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান জানান, সরকারের সঙ্গে স্যান্ডর কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ফি বাড়ে। এ বছরও বেড়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের এবং দরিদ্র রোগীদের বছরজুড়ে সাড়ে ৬০০ সেশন ফ্রি সেবা দিয়ে থাকি। কিন্তু বছর বছর রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অথচ সেশন বাড়ছে না। এখন রোগী কতটা সেশন কোন সুবিধায় পাবেন তার শিডিউল জানতে এসে তারা ফি বাড়ানোর বিষয়টি জানেন। আবার বেশি রোগী হওয়ায় অনেককে সেবা দিতে না পারায় তারা কিছু দাবি জানিয়েছেন।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার জানান, কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে রোগীর স্বজনেরা সড়ক অবরোধ করলে আশপাশে যানজট লেগে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে তাদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।