বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েবঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে আসার পরই আমাদের নবযুগের সূচনা হয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে আসার পরই আমাদের নবযুগের সূচনা হয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি সশরীরে নতুন স্বাধীন স্বদেশে ফিরে আসার পরই আমাদের নবযুগের যাত্রা শুরু হয়। এরপর জাতির পিতা হিসেবে যা যা করনীয় ছিল বঙ্গবন্ধু তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাষণকালে তা করে দিয়ে গেছেন। তিনি আমাদের জন্য অত্যন্ত সুন্দর একটি পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন। যত যত বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে সেগুলোর সদস্য পদ দিয়ে গেছেন এমনকি জাতিসংঘের সদস্য পদও দিয়ে গেছেন।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণে অত্যন্ত দূরদর্শী ছিলেন। এই ধরনের ক্ষণজন্মা পুরুষ আমাদের সমাজে এসেছিলেন বলেই আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সাত কোটি বাঙালি মানুষ হয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আর সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে, সোনার বাংলা অর্থাৎ একটা উন্নত, সমৃদ্ধশালী, স্থিতিশীল, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি যেখানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা সবার জন্য নিশ্চিত হবে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘অনেকগুলো ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার মধ্যে সাদৃশ্য আছে যেমন; (তাঁরা দুজনেই) সাহসী ও দৃঢ়চেতা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। আর এটা অর্জনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় দায়িত্ব রয়েছে। এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে আমাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশকে ইতিমধ্যে মর্যাদার আসনে নিয়ে এসেছি তবে এতে আত্মতৃপ্ত হলে চলবে না। আমরা সেই বাংলাদেশকে দেখতে চাই, যখন কোনো বাঙালি তার পাসপোর্ট নিয়ে কোনো বিদেশি মিশনে যাবে- বিদেশিরা তখন তাকে ভিসা দিতে দ্বিধা করবেনা। এমনকি বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে অন্যদেশে ভিসামুক্ত যাতায়াত করা যাবে- সে পর্যায়ে দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, এমপি বলেন,  ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন, ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারিতে, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা ছিল যা থেকে এ প্রজন্মের কূটনীতিকরা অনুপ্রাণিত হতে পারেন।’ এক্ষেত্রে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক চৌধুরীসহ তৎকালীন কূটনীতিকদের প্রশংসা করে শাহরিয়ার আলম বলেন, তাঁরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে যে আবেগঘন বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেখানে গণহত্যা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক তদন্তের কথা বলেছিলেন যে কাজটি এখনো আমরা শেষ করে আনতে পারিনি।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এবারের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস এমন এক সময়ে আমাদের সামনে এসেছে যখন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে রয়েছে। নমিনাল জিডিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বে ৩৫তম। যেখানে বাংলাদেশের পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশ। আর পিপিপি’র (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) ভিত্তিতে জিডিপিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার এখন ২৫তম। যেখানে মাত্র ১৪ বছর আগেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫৮তম।’ তিনি বলেন,  ‘যাঁর নেতৃত্বে এই গতিতে আমরা অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জন করেছি তাঁর হাতকে শক্তিশালী করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’ বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আদর্শকে ধারণ করেই আমরা দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হবো- বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
আলোচনা সভার পূর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। আলোচনা সভার শুরুতে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি (বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে) তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণ শোনানো হয়। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ