শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়লোডশেডিং আরও বেড়েছে

লোডশেডিং আরও বেড়েছে

বিশ্বে জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা, ডলারের দর বৃদ্ধি বছরের মাঝামাঝিতে দেশে ফিরিয়ে আনে লোডশেডিং। সেপ্টেম্বর নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা আশা দিলেও সেই সময়ে এসে লোডশেডিং আরও বেড়েছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বিদ্যুতের লোডশেডিং কোথাও কোথাও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দিনের পাশাপাশি গরমের মধ্যে রাতও কাটাতে হচ্ছে বিদ্যুৎহীন অবস্থায়। ফলে গরমের মধ্য হাঁপিয়ে উঠতে হচ্ছে মানুষকে। বিতরণকারী সংস্থাগুলো বলছে, সঙ্কটের মধ্যে অক্টোবরে গরম বেড়েছে যা পরিস্থিতি নাজুক করে তুলছে। চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না, ফলে কর্তৃপক্ষও অসহায়।

দেশে এখন দিনে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মতো। সেখানে উৎপাদন হচ্ছে ১২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় দেড় থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশে ১২ হাজার ১৮৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। আর আজ রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা লোডশেডিং বাড়ার জন্য জ্বালানি সঙ্কটের পুরনো কারণগুলোর সঙ্গে সাম্প্রতিক জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়কেও কারণ দেখাচ্ছেন।

একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রিড বিপর্যয়ের পর থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ানরা সাবধানতার ‘চরম নীতি’ অনুসরণ করছেন। সেজন্য খুবই সতর্কতার সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালানো হচ্ছে। সে কারণে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে যেখানে ১৮০-১৯০ মেগাওয়াট উৎপাদন হতো গ্রিড বিপর্যয়ের পর সেখানে ১২০-১৫০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে না। গত ৪ অক্টোবর বিদ্যুতের জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সমস্যার পর অন্তত ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিশাল এলাকা।

জ্বালানি সঙ্কটে জুলাইয়ে সরকার সূচি অনুযায়ী লোডশেডিংয়ের যে পরিকল্পনা দিয়েছিল উৎপাদন কম হওয়ায় শুরু থেকেই তা ভেস্তে যায়। ঘাটতি বাড়তে থাকার মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে ঘটে বিপর্যয়। এরপর সঞ্চালন লাইন সচল হলেও লোডশেডিং আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা বলছেন, যখন প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন, তখন বেশ কয়েকটি কারণ মিলে সঙ্কট তীব্র হয়েছে। তাদের ভাষ্য, বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনেকগুলো ইউনিট কারিগরি কারণে বন্ধ আছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ আরও কমেছে। বেশ কিছু বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছে না।

আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ৪-৫ মাসের বিল বকেয়া রয়েছে, সে কারণে তারা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হওয়ার মধ্যে গরমে চাহিদা বেড়েছে। গরম না কমলে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আশা দেখছেন না তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ