শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনভূমি দখলদারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে শীঘ্রই প্রতিরোধ আইন : ভূমিমন্ত্রী

ভূমি দখলদারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে শীঘ্রই প্রতিরোধ আইন : ভূমিমন্ত্রী

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, দলিল যার জায়গা তার- এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা কাজ করছি। ভূমি দখলদারদের দৌরাত্ম্য ও শোষণের হাত থেকে প্রকৃত খতিয়ানভুক্ত মালিকদের রক্ষা করা হবে। এ জন্য ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২১’ প্রণয়ন করা হচ্ছে। যা শীঘ্রই জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। গতকাল শনিবার আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২২ এ সেরা প্রকল্প হিসেবে বিজয়ী হওয়ায় মন্ত্রীকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।Javed Chember
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য ও চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি এম এ লতিফ, দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক এম এ মালেক, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলাম দোভাষ। বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও এস এম আবুল কালাম, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ ছালাম, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ একেএম আকতার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন ও হাসনাত মো. আবু ওবাইদা, সাবেক পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব ও এম এ মোতালেব, দৈনিক পূর্বকোণের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, রিহ্যাবের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মিয়া আবদুর রহিম, বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী, ইউরো পেট্রো প্রোডাক্ট লি. এর চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম কমান্ডার মোজাফফর আহমদ বক্তব্য রাখেন।

ভূমিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, চলমান ডিজিটাল সার্ভের ফলাফল খুবই ভালো। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল সার্ভের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন করবেন। এই সার্ভের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের ভূমি বিষয়ক সকল সংকট দূর হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম এ লতিফ এমপি বলেন, ভূমিমন্ত্রী সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তার অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হননি। যার ফলশ্রুতিতে তার নেতৃত্বে ভূমি মন্ত্রণালয় বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, মন্ত্রী জাবেদ একজন মানুষ হিসেবে অসাধারণ। আপনারা তার ব্যবসায়ীক নানা গুণের কথা বললেন, চেম্বারের নেতৃত্ব দেয়ার কথা বললেন। কিন্তু মানুষ হিসেবে মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ কত বড় মাপের সেটি আমি বলতে চাই।

এম এ মালেক বলেন, চট্টগ্রামের দুই কোটিরও বেশি মানুষের জন্য বিশেষায়িত কোনো ক্যান্সার হাসাপাতাল নেই। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এখানে একটি ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। মন্ত্রী জাবেদ ওই হাসপাতালের জন্য সরকারের কাছ থেকে সাড়ে আট কাঠা জায়গা নিয়ে দিয়েছেন। এ টুকু উনার জন্য যথেষ্ট ছিল, কিন্তু উনি এর বাইরে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে হাসপাতালের জন্য পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। তিনি আরো অনুদানের ব্যবস্থা করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। চট্টগ্রামের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য উনি যেভাবে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের কার্যক্রমকে সহজ করে দিয়েছেন তা অতুলনীয়। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, হাসপাতাল ভবনের চার তলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অতি দ্রুত এই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। ইতোমধ্যে মানুষ এই হাসপাতালের জন্য প্রায় ত্রিশ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। এটি চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের ক্যান্সার চিকিৎসায় অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, সরকার জনগণের দোর গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বর্তমানে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) দপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সার্ভে বাস্তবায়িত হলে দেশের ভূমি সংক্রান্ত সকল জটিলতা নিরসন হবে।

চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, বর্তমান ভূমিমন্ত্রী চিটাগাং চেম্বারের দায়িত্বে থাকাকালীন বন্দর ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেটাইজেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যশস্যে দিন দিন আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে, যা নিরসনে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন কৃষি জাতীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা দরকার।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ