শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদটপগ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে মুনাফা অর্জন করা অনৈতিক : ভোক্তা অধিদপ্তর

গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে মুনাফা অর্জন করা অনৈতিক : ভোক্তা অধিদপ্তর

খোলা বাজারে যে মানের চাল বিক্রি হচ্ছে, সেই চালই শুধু প্যাকেট করে ৩০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি করছে অনেক সুপারশপ। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্ত এ তথ্য জানিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন সুপারশপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ভোক্তা অধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থার মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ” গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে এভাবে মুনাফা অর্জন করা অনৈতিক।”

তিনি বলেন, “প্যাকেটজাত চালের এই অতিরিক্ত দামের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খোলা বাজারের চালের দামে। ফলে বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে চালের দাম। চিনি ও লবণসহ অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও একইভাবে অনৈতিক উপায়ে মুনাফা করছে তারা। চালসহ নিত্যপণ্যের খোলা ও প্যাকেটজাত অবস্থায় দামের এই অসঙ্গতির বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ভোক্তা অধিদপ্তর বলছে, বাজারে রূপচাঁদা, প্রাণ, এসিআই, তীর, চাষীসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চাল প্যাকেটজাত করে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল খোলা অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৬৮ টাকা দরে। কিন্তু সেই একইমানের চাল প্যাকেটজাত করে স্বপ্ন, আড়ং, প্রিন্স বাজার, ইউনিমার্ট, মীনাবাজার, অ্যাগোরাসহ বিভিন সুপারশপে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

এক্ষেত্রে মিনিকেট চালে সুপারশপগুলো ১৪ থেকে ৩৩ শতাংশ এবং চিনিগুঁড়া চালে ২১ থেকে ২৯ শতাংশ মুনাফা করছে। একইভাবে লবণে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ এবং ইলিশ মাছে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছে বলে জানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ।

এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, “অভিযানে দেখা গেছে, যেকোনো পণ্যে সুপারশপগুলোর লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। সুপার প্রিমিয়ামের নামে ৫২ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৮ টাকায়। এভাবে তারা ভোক্তার পকেট কাটছে। কে কত টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছে, সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।”

বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সুপারশপগুলোর ভূমিকা বেশি বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। ভোক্তারা আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি খাতে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভোক্তারা। আগে এক বছরে যে পরিমাণ অভিযোগ জমা পড়তো, এখন তা দুইগুণ বেড়েছে।”

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, “ডিমের দামেও লাভ করা হচ্ছে আকাশ-পাতাল ব্যবধানে। প্রতি ডজন ডিমে তারা লাভ করছে ১৮.৩ টাকা করে। খোলা পণ্য প্যাকেটজাত করা মানেই তাদের বাড়তি লাভ।”

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুপারসপগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন, প্যাকেটজাত পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) সুপারশপগুলো নির্ধারণ করে না। বাজারজাতকারী ব্র্যান্ডগুলোই তা নির্ধারণ করে দেয়। এক্ষেত্রে তাদের দায় নেই। নিয়ম অনুযায়ী তারা মুনাফা করছেন।

স্বপ্ন সুপারশপের ম্যানেজার (পণ্য) তানিম খান বলেন, অতিরিক্ত নয়, বাজারের প্রচলিত নিয়মেই মুনাফা করা হচ্ছে। সুপারশপগুলোতে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো পণ্য স্বপ্নে রাখা হয় না। মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগেই সেগুলো সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ফেরত দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ