চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে হাইওয়ে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে বাসের নিচে চাপা পড়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অটোরিক্সা চালক এবং গুরুতর আহত হন ৫ যাত্রী। বুধবার (৩ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১টায় পৌরসভার নুনাছরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা হাইওয়ে পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তাদের অভিযোগ- পুলিশকে টাকা না দিলে পুলিশ সেসব সিএনজিচালিত অটোরিক্সা আটক করে। তাছাড়া যেসব গাড়ি টাকা দেয় সেসব গাড়ি অনায়াসে এ মহাসড়কে চলাচল করছে। ফলে তারা হাইওয়ে পুলিশকে ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে। অন্যদিকে একই সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গেট এলাকায় একই মুখী দুটি যাত্রীবাহী লোকাল বাসের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ৬ যাত্রী আহত হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে সীতাকুণ্ড থেকে ঢাকামুখী লেনে একটি সিএনজি অটোরিক্সা নুনাছরা এলাকায় পৌঁছলে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল গাড়িটিকে থামার জন্য সংকেত দেয়। কিন্তু মহাসড়কে সিএনজি অবৈধ হওয়ায় পুলিশ মামলা দিতে পারে এ ভয়ে সিএনজি চালক ভয়ে তাৎক্ষণিক তার গাড়িটি ঘুরিয়ে ফেলে এবং আবারও সীতাকুণ্ড অভিমুখে পালানোর চেষ্টা করলে ঢাকামুখী একটি দ্রুতগামী বাস গাড়িটিকে চাপা দেয়। এতে সিএনজি চালক মো. কোরবান আলী (৪০) ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং সিএনজিতে থাকা অপর ৪ যাত্রী গুরুতর আহত হন। নিহত কোরবান আলী সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইয়াকুবনগর গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।
অপরদিকে সোনাইছড়ি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দুটি লোকাল বাসের সংঘর্ষ হলে আরো ৬ যাত্রী আহত হন। পৃথক দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- মিরসরাই ছোট কমলদহের খতিজা আক্তার (৩০), সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলার ফেরদৌসী আক্তার (৪০), পন্থিছিলার রৌশনী (২০), একই এলাকার নুরুল ইসলাম (৩২), কুমিরার মো. মাসুদ (২১), মগপুকুরের রেজাউল করিম (২১), সন্দ্বীপের দেলোয়ার হোসেন (৫০), সীতাকুণ্ড লাঠিয়াল পাড়ার মো. সিদ্দিকুর রহমান (৬০), সন্দ্বীপের আবু তাহের (৬০), কুমিল্লা জেলার সবুজ (১৭) ও মিরসরাই ছোটকমলদহের সাফিক (৫)।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১২ জনকে সীতাকুণ্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা কোরবান আলী নামের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম বলেন, অটোরিক্সাটি ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় হাইওয়ে পুলিশ থামার জন্য সংকেত দিলে চালক দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে একটি বাসের নিচে পড়ে যায়। এতে দুর্ঘটনা ঘটে।
