শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......বাংলাদেশ দূতাবাস, ম্যানিলার বিজনেস সেমিনার

বাংলাদেশ দূতাবাস, ম্যানিলার বিজনেস সেমিনার

‘অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহ’ পালনের অংশ হিসাবে ম্যানিলাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ফিলিপাইন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (পিসিসিআই)-এর সহযোগিতায় স্থানীয় একটি পাঁচতারকা হোটেলে ২৪ জুন ২০২২ তারিখে একটি বিজনেস সেমিনারের আয়োজন করে। উক্ত সেমিনারে ফিলিপাইনের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ফিলিপাইনে বসবাসরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ, পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মীসহ প্রায় ষাট জন অংশগ্রহণ করেন। রাষ্ট্রদূত এফ. এম. বোরহান উদ্দিন উক্ত সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়া, ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগ প্রধান নাথানিয়েল জি. ইম্পেরিয়াল এবং ফিলিপাইন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর আন্তর্জাতিক কমিটি চেয়ারম্যান জুড অ্যাগুইলার সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন।seminar

উদ্বোধনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যে ২৬শে নভেম্বর ২০২১ তারিখে সেবু চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ০৬ জুন ২০২২ তারিখে দাভাও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাথে পৃথক সভার আয়োজন করেছে। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের বর্তমান অবস্থার উপর আলোকপাত করে উল্লেখ করেন যে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যের পরিমাণ দৃশ্যত সন্তোষজনক নয়। তবে বিগত এক দশকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য সহযোগিতাকে আরো প্রশস্ত ও বৈচিত্র্যময় করতে যৌথ গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে অধিকতর যোগাযোগ বৃদ্ধির উপর বেশি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া, রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন।

ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগ প্রধান নাথানিয়েল জি. ইম্পেরিয়াল তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে ফিলিপাইন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দেশ যারা ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আগামী বছরগুলোতে নিজ নিজ চেম্বারের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এই সেমিনার বাংলাদেশ-ফিলিপাইনের মধ্যকার নিবিড় অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথ আরো প্রশস্ত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফিলিপাইন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আন্তর্জাতিক কমিটি চেয়ারম্যান জুড অ্যাগুইলার বাংলাদেশ দূতাবাসের এই ব্যবসায়িক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির চমৎকার সুযোগ রয়েছে। তিনি একটি বিজনেস কাউন্সিল গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উভয় দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া, বাণিজ্যের পরিধি ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিবিধ ক্ষেত্রে বিদ্যমান অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে চেম্বার বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে একযোগে কাজ করে যাবে বলেও তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

 অতিথিদের বক্তব্য প্রদানের পর দূতাবাসের কাউন্সেলর সায়মা রাজ্জাকী ‘বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক ২০ মিনিটের একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন যেখানে বাংলাদেশ-ফিলিপাইন দ্বিপাক্ষিক-অর্থনৈতিক সম্পর্কের তুলনামূলক বিশ্লেষণ, বাংলাদেশের বিভিন্ন গতিশীল খাতসমূহ, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ নীতি ও সুবিধা এবং বাংলাদেশ-ফিলিপাইনের মধ্যকার ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহের উপর আলোকপাত করা হয়।

সেমিনারের শেষ পর্যায়ে উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ দুই দেশের মধ্যকার সম্ভাব্য বানিজ্য-বিনিয়োগের খাত উল্লেখপূর্বক মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে, বাংলাদেশে উৎপাদিত ঔষধসামগ্রীর ফিলিপাইনের বাজারে অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ