শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ-আত্মসাৎ করা সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের এদেশের জনগণ ভোট দেবে না...

চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ-আত্মসাৎ করা সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের এদেশের জনগণ ভোট দেবে না : প্রধানমন্ত্রী

দেশ ও জনগণের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের অবদান তুলে ধরে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকা ছাড়া তো গতি নেই বাংলাদেশের। এটাও মনে রাখতে হবে। ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় (ভার্চ্যুয়াল) প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ২৩-বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নেতৃত্বশূন্য কোন দল নির্বাচন করবে আর জনগণ ভোট দেবে কী দেখে? ওই চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ-আত্মসাৎ করা অথবা খুন, অস্ত্র চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাদেরকে এদেশের জনগণ ভোট দেবে দেশ পরিচালনার জন্য? তা তো এদেশের জনগণ দেবে না।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। তারা (দেশবাসী) জানে আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা, নৌকার যে প্রয়োজন এবারের বন্যায়ও তো নৌকার জন্য হাহাকার। তা নৌকা ছাড়া তো গতি নেই বাংলাদেশের। এটাও মনে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ তার জন্মলগ্ন থেকে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতা শুধু এনে দেয়নি, স্বাধীনতার সুফল এখন জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। প্রত্যেকটা বাড়িতে আমি যেমন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি এবং আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। সবার জন্য ভূমি এবং গৃহ আমরা তৈরি করে দিচ্ছি। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটা আমাদের আমরা যতটুকু চিনি, জানি এদেশের প্রকৃতি, এদেশের পরিবেশ। এদেশের মানুষ, মানুষের কল্যাণ। আওয়ামী লীগ যতটা বুঝবে অন্যরা তা বুঝে না। কারণ বুঝবে কী করে বিএপির হৃদয় তো থাকে পাকিস্তানে। তাদের মনেই আছে পাকিস্তান। দিল মে হ্যায় পেয়ারে পাকিস্তান। সারাক্ষণ গুণ গুণ করে ঐ গানই গায়। আয় মেরে জান পেয়ারে… আখো কী তারা, আসমান কী চাঁদ, মেরে জান পাকিস্তান। এই হলো খালেদা জিয়ার কথা।

তিনি বলেন, এই যাদের মানসিকতা খারাপ তো কখনো বাংলাদেশের ভালো চাইবে না। এটা খুব স্বাভাবিক। এটা নিয়ে আপনাদের এত দুঃখ করার, চিন্তা করার কিছু না। ওদের যত কথা না বলা যায় ততই ভালো। ওরা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বরং সবগুলোকে গাট্টি বাইন্ধা পাকিস্তানে পাঠায়ে দিলেই ভালো হয়। পাকিস্তানে এখন যে অবস্থা ওখানে থাকলেই ভালো থাকবে। এখনো লাহোরে সোনার দোকানে খালেদা জিয়ার বড় ছবি আছে। ওই দোকানের সোনার গহনা তার খুব প্রিয়। তাদের মানসিকতা এদিকে। আমাদের বাংলাদেশের জন্য না।

জিয়া-খালেদা-এরশাদ কারো জন্ম বাংলাদেশে নয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটাও ঠিক এদের জন্মও তো বাংলাদেশে না। না জিয়ার জন্ম বাংলাদেশ, না খালেদা জিয়ার জন্ম। কারো জন্মই না। এরশাদও তো কুচ কুচ বিহারি। তারও জন্ম কুচবিহারে। একমাত্র আমার বাবাই দেশের মাটিতে জন্ম নিয়েছেন। কাজেই মাটির টান আলাদা। এখানে আমাদের নাড়ি টান। কাজেই এদেশের মানুষের ভাগ্য গড়াটাই আমাদের লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) একটা ভালো ইয়ে আছে- মিথ্যা কথা বানানোর আর মিথ্যা কথা বলার একটা কারখানা যদি থেকে থাকে সেটা হলো বিএনপি। তারা মিথ্যা কথা বানানো এবং বলতে খুব ভালো পারে। যত রকম মিথ্যা এটার প্রডাকশন তারা খুবই ভালোই দেয়, বলেও যায়। আমাদের কিছু লোক সেটা নিয়েও বেড়ায়। ‘

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা পদ্মা সেতু করেছি আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে। এটা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। বিএনপি আবার প্রশ্ন তোলে কোন মুখে যাদের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে। সাজা পেয়েছে খালেদা জিয়া। শুধু এতিমের অর্থ কেন নাইকো, গেটকো এ রকম বহু কেস ঝুলে আছে। ’

তারেক জিয়াকে দেশ আসতে দেওয়া হচ্ছে না বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির এক নেতা বলেছেন যে তারেক জিয়াকে নাকি আসতে দেওয়া হয় না। কথাটা ঠিক না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছে। ২০০৭ সালে তখন তারেক জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুছলেখা দিয়েছিল, একেবারে লিখিত দলিল সে আর রাজনীতি করবে না। এই শর্তে সে কারাগার থেকে মুক্তি নিয়ে সে বিদেশে পাড়ি জমায়।  এটাতো বিএনপি নেতাদের ভুলে যাওয়ার কথা না। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক নেতার তার যদি সাহস না থাকে ফিরে আসার সে আবার নেতৃত্ব দেয় কীভাবে। আমাকে তো বাধা দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দিয়েছিল। ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছিল। আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে আমি বলেছিলাম যে আমি দেশে যাবো। আমি কোর্টে হাজিরা দেবো এবং আমি মামলা মোকাবিলা করবো। আমি তো জোর করে দেশে ফিরে এসেছি। তারপর আমাকে কারাবন্দী করা হয়েছে, ঠিক আছে। আমি রাজনীতি করি, কারাবন্দী হতেই হবে। আমাকে তো খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ারা গ্রেনেড মেরে হত্যাও করতে চেয়েছিল। … বার বার আমার ওপর আঘাত করেছে, গুলি, বোমা। কারা করেছে এরাই তো করেছে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ