শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদটপঅগ্নিকাণ্ডে হতাহতের তথ্য সংশোধন করেছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।। নিহতের সংখ্যা...

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের তথ্য সংশোধন করেছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।। নিহতের সংখ্যা ৪১

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতের তথ্য সংশোধন করেছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪১ জন। ৬ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মো. মমিনুর রহমান বলেন, কিছু মরদেহ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে একবার গণনা করা হয়। আবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও সেগুলো গণনা করা হয়। তাতে সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, পরে সব মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাই মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১। এরপর আর কোনো মৃতদেহ উদ্ধার হলে তা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রাখা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সব মরদেহ এখন হাসপাতালের মর্গে আনা হবে। সেখানে ময়নাতদন্ত হবে। শনাক্ত না হলে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। শনাক্তের পর এখান থেকেই স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালে একের পর এক লাশ বের করে আনতে থাকেন উদ্ধারকর্মীরা। এরপর দফায় দফায় বেড়ে মৃত্যুর
কিন্তু এরপর জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বরাতে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন রকম তথ্য আসতে থাকে, তাতে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা প্রশাসন ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় মৃতের সংখ্যা নিয়ে তিন রকমের তথ্য জানায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের কাছে ৪১টি মরদেহ থাকার কথাই বলে আসছিল। কিন্তু রাতে জেলা প্রশাসন নিহতের সংখ্যা জানায় ৪৫। আর সিভিল সার্জনের কার্যালয় একাধিকবার মৃতের সংখ্যা বদল করে।
রবিবার রাত ১০টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ফেইসবুক পেইজে নিহতের সংখ্যা দেয়া হয় ৪৯ জন। এরপর তা দুইবার সংশোধন করে ৪৫ জন ও ৪৬ জন করা হয়। পরে রাত ১১টা ২০ মিনিটে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে ফোন করা হলে তারা জানায়, নিহতের সংখ্যা ৪৯ জনই হবে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের সহকারী কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাস জানান, রাত ১০টা তারা ৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।
কিন্তু সোমবার সকালে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার সময় ওই তথ্যে ভুল থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ৪১টি লাশই পেয়েছে। জেলা প্রশাসন জানায়, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে ৪১ জনের। আর সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, হাসপাতালের তথ্যই অনুসরণ করতে হবে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৪১টা লাশ পেয়েছি। এর মধ্যে ময়নাতদন্ত হয়েছে ১৮ জনের। শনাক্তদের লাশ হস্তান্তর করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন নিহত বলে আমরা জেনেছি। তাদের কয়েকজন নিখোঁজ আছে। ফায়ার সার্ভিসের আহত ২ জন ঢাকায় এবং ৩ জন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামে আছেন।
শামীম আহসান আরও বলেন, বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে মোট ২১০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এখন ভর্তি আছেন ১০২ জন। সিএমএইচে ১৪ জন এবং জেনারেল হাসপাতালে ২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আছেন আরও ১১ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় রবিবার রাতে যে ৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, নিহতের সংখ্যা ৪১ জন হবে। গতকাল কিছু ক্ষেত্রে দুবার গণনা করা হয়েছে। সে কারণে মৃতের সংখ্যা ৪৯ বলা হয়েছিল। আসলে তা ৪১ হবে। এছাড়া, এখন থেকে হাসপাতালের পরিচালকের দেওয়া তথ্য অনুসরণ করার পরামর্শ দেন সিভিল সার্জন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ