বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদটপআন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরু

আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরু

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পালা শেষ। অবশেষে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন থেকে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের শুরু হয়েছে। ১ জুন দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি হুইসেল বাজিয়ে নীলফামারীর সীমান্ত চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে। মাত্র ৩০ মিনিট অবস্থানের পর স্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালুকদার জানান, এদিন প্রথম দিনে ১৮ জন জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত যাবে।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সপ্তাহে দু’দিন (রোব ও বুধবার) এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত সোম ও বৃহস্পতিবার চলাচল করবে। জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে এবং ঢাকায় এসে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। আবার ঢাকা থেকে ছাড়বে ৯টা ৫০ মিনিটে এবং পরদিন সকাল ৭টা ৫ মিনিটে ভারতে পৌঁছাবে।
মিতালীতে রংপুর বিভাগের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বরাদ্দ রয়েছে। এই ট্রেনে ভ্রমণকারী যাত্রীদের অবশ্যই করোনা টিকা নেওয়ার সনদ থাকতে হবে এবং ভ্রমণকারী যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি বার্থ ৪ হাজার ৯০৫ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৮০৫ টাকা, এসি চেয়ার ২ হাজার ৭৫ টাকা।
ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত ২৩ মে। ২৭ মে চিলাহাটি ও নিউ জলপাইগুড়ির টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। পাসপোর্ট-ভিসা দেখিয়ে টিকিট সরবরাহ করছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশনে এই ট্রেনের টিকিট মিলছে।
৫ বছর পর্যন্ত অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে ট্রেনে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। চিলাহাটি স্টেশন থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ভাড়া নিধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৫০ টাকা। ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশ্যে যাত্রাপথে চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনে ৩০ মিনিট যাত্রা বিরতি করবে।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বাংলাদেশের চিলাহাটি আর ভারতের হলদিবাড়ী পথে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। ৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর মালবাহী ট্রেন এবং ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর থেকে মালবাহী ট্রেন চলাচল করলেও করোনা ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী
এক্সপ্রেস চলাচল।
গত ২৭ মার্চ মিতালী এক্সপ্রেসটি চলাচলের ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন রেলপথমন্ত্রী নুরল ইসলাম সুজন ও ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
ট্রেনটি উদ্বোধন করা হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবে বন্ধ থাকে। এই রেলপথের দূরত্ব ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ৫৯৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের অংশে ৬৯ কিলোমিটার রয়েছে।
সূত্র জানায়, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে যা আয় হবে তা দুই দেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভাগ করে নেবে। এ পথে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হলে বাংলাদেশের রেলওয়ে বিভাগ আয়ের ৮০ শতাংশ আর ২০ শতাংশ পাবে ভারতীয় রেলওয়ে বিভাগ।
ট্রেনটি ভারত থেকে চালিয়ে আনেন সেদেশের চালক বিবেকানন্দ চৌধুরী। চিলাহাটি ইঞ্জিন পালিয়ে সেটি নিয়ে রওনা করেন শাহজাহান আলী। ট্রেনটি চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছালে রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, প্রধান বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান ফিরোজী, পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মুহম্মদ কুদরত ই-খুদাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ