বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েদেশের উন্নয়ন করে বলেই আওয়ামীলীগের বিচার করতে চায় বিএনপিঃ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

দেশের উন্নয়ন করে বলেই আওয়ামীলীগের বিচার করতে চায় বিএনপিঃ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে বলেই বিএনপি ও তাদের নেতারা আওয়ামীলীগের বিচার করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আজ শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ঢাদসিক) উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দারিদ্র্য দূর করেছে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, গৃহহীনদের ঘর দিয়েছে, কমিউনিটি ক্লিনিক করেছে, দেশে ডিজিটিইজেশন হয়েছে, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী ট্যানেল, মেট্রোরেল, রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা বন্দরসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করছে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শহরের সকল সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে। সর্বোপরি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এগুলোই আওয়ামীলীগের অপরাধ। এগুলোর নাম দেশ ধ্বংস করা। এজন্য বিএনপি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিচার করবে। এছাড়া তো বিচারের হুমকি দেয়ার আর কোনো কারণ নেই।’

মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘একশো বিলিয়ন ডলারের দেশ‌ এখন চার শত বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে, নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাসী-গুন্ডামি কমেছে, নারীরা সম্মান নিয়ে একাকি ঘুরতে পারছে। এসব কাজ বিএনপি নেতাকর্মীদের ভালো লাগে না। দেশ এগিয়ে যাক তারা তা কখনোই চায় না।’

নিজেদের মনগড়া কথা না বলে বিএনপিকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য দিয়ে বড় বড় কথা বলে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। মানুষ এখন আর বোকা নেই। যদি দেশকে ভালবাসতে না পারেন তাহলে আপনারা আপনাদের পিয়ারা পাকিস্তানে চলে যান। দেশের সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন আবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন এটা মেনে নেয়া যাবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের পুরো মাস্টারপ্লান সম্পন্ন করেই ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জানতেন যে ২৫ মার্চের গোলটেবিল বৈঠক ভেঙ্গে যাবে। আর বৈঠক ভেঙ্গে গেলে পশ্চিম পাকিস্তান আমাদেরকে আক্রমণ করবে। তারা আক্রমণ করার শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করবো। বঙ্গবন্ধু এদেশকে কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী দেশ হিসেবে গড়তে চাননি। তিনি বাঙালি জাতির যে অধিকার তা সারাবিশ্বকে দেখাতে চেয়েছেন। আমরা নির্বাচিত, আমাদের ম্যান্ডেট হলো স্বাধীনতা। সেই ম্যান্ডেট নিয়েই আমরা শাসনতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছি। কিন্তু পাকিস্তান আমাদেরকে শাসনতন্ত্র কায়েম করতে দেয়নি। আমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছে। আমরা প্রতিরোধ যুদ্ধ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি। এভাবে মাস্টারপ্ল্যান করেই বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করেছি।’

মুক্তিযুদ্ধের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘সেজন্যই বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। আজকাল অনেকেই ভুল করে বলে ফেলেন — ৭ই মার্চেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আসলে ৭ই মার্চ স্বাধীনতা সংগ্রামের আহবান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ঠিক করে রেখেছিলেন যে, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পরই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হবে। কেন হবে? কারণ বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা চিত্তরঞ্জন সুতারকে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই চিত্তরঞ্জন সুতার ২৩ মার্চ তার স্ত্রীকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নিকট একটি চিরকুট পাঠান। সেই চিরকুটে লেখা ছিল — বরযাত্রীর জন্য সব প্রস্তুতি হয়ে গেছে। এখানে বরযাত্রী মানে হলো মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তারপর বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সকল সংগঠকগণ ২৫ মার্চ রাতেই — যে যার মতো ভারতে চলে গিয়েছেন। কেউ গিয়েছেন কেরানীগঞ্জ দিয়ে, কেউ গিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে, কেউ গিয়েছেন যশোর দিয়ে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শহীদ উল্লাহ মিনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ