রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বিরোধী দলের নির্দলীয় সরকারের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন

বিরোধী দলের নির্দলীয় সরকারের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন

ষ্টাফরিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের দিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনের রূপরেখা জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছে বিরোধী দল। বুধবার মাগরিবের বিরতীর পর ৭টা বেজে ১ মিনিটে সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িঁয়ে ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন। এ বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান ও অনুরোধ জানান। জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ প্রস্তাবটি কোন বিধি অনুযায়ী দেয়া হলে সময় নির্ধারণ করে আলোচনা করতে পারি। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবকে সংবিধান বর্হিভূত বলে দাবি করেছেন।

জমির উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি সুরাহা হওয়া দরকার। এ জন্য বিএনপি ১৮ দলের পক্ষ থেকে জনগনের আশা আকাংখা বিষয়টি প্রস্তাব আকারে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে উত্থাপন করছি।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দু‘টি নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এক সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে আরেক সরকারের অধীনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। এ দু‘টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২০ জন উপদেষ্টার মধ্য হতে  সরকারী দল মনোনীত ৫ জন ও বিরোধী দল মনোনীত ৫ জনকে দিয়ে ১০ জনের সরকার গঠন হতে পারে। আর আলোচনার মাধ্যমে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে সরকার প্রধান করা যেতে পারে। এ প্রস্তাবটি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, বিএনটির পক্ষ থেকে ও ১৮ দলীয় সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের প্রস্তাব গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি ও অনুরোধ করছি। বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার আগে সংসদে নির্বাচনকালীন সরকারকে নির্বাচিত করে দিতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের কথা বলেন। সংবিধানের ৫৭ ও ৫৮ ধারা যেভাবে সংশোধনী করা হয়েছে, সে অনুযায়ী নির্বাচন করা হলে, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন। এ জন্য যেভাবে গণতান্ত্রিক ধারা চালু হয়েছে তা অব্যাহত থাকুক। এটি জনগনের ইচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এটি গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেবেন এটি আমাদের প্রত্যাশা।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে একটি সু-নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে যে কোন একটি বিধি অনুযায়ী প্রস্তাব দিলে আমরা সময় নির্ধারণ করে আলোচনা করতে পারি। এ দু‘ সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন ১৮জন। তাদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবটি সংবিধান সম্মত নয়। সংবিধান বর্হিভূত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন, তিনি সংবিধানের বাইরে যাবেন না। জমির উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবটি ছিলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে। কিন্তু তোফায়েল সাহেব নাতিদীর্ঘ বক্তব্য দিয়ে আমাদের প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেন। আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্দলীয় সরকারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। আজকে যদি পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিতে চান, দিতে পারেন। হাজার কথা বলতে পারেন।

এম কে আনোয়ার বলেন, আমাদের বলা হয়েছে, কোন প্রস্তাব থাকলে সংসদে এসে দেয়ার জন্য। এ জন্যই আমরা সংসদে এসেছি। জাতি আজ সংকটে। আর এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে  সংবিধান ১৫তম সংশোধনের মাধ্যমে। এর পর এমকে আনোয়ার বলেন, সরকারী দল থেকে বার বার বলা হচ্ছে আপনাদের কিছু বলার থাকলে সংসদে এসে বলূন। এজন্য আমরা সংসদে এসেছি। তিনি বলেন, আজকে দেশের মানুষ একটি সংকটের মধ্যে আছে । তা হলো সাংবিধানিক সংকট।

পঞ্চদশ সংশোদনীর মাধ্যমে দেশের জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা সংকট নিরসনের জন্য সংসদে এসেছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী সমস্যা সমাধান করার জন্য সংকট নিরসনের পথ সুচনা করেছি। তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা সমস্যা না দশজন যে কোনো খান থেকে আনতে পারেন। সরকার এবং বিরোধীদল যদি একমত হন তাহলে এসমস্যা সমাধানের জন্য কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভালো জানেন দেশের মানুষ কি চায়। সে অনুযায়ী তিনি ব্যবস্থা নিবেন। না হলে দেশে সংঘাত সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ