সাম্প্রতিক ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে দুপুরে বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। কুমিল্লার ঘটনায় সম্পৃক্তদের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে বলেও জানান সচিব।
কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীর পর সহিংসতা ছড়িয়েছে রংপুরসহ বহু জায়গায়। এর মধ্যে সক্রিয় হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। আটক, গ্রেপ্তার হয়েছে অনেক। তবে এখনো মূল দুস্কৃতিকারীদের রহস্য উন্মোচিত হয়নি। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচনায় ঠাঁই পায় বিষয়টি। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। দেশের সাম্প্রতিক সবগুলো সহিংসতার ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে কুমিল্লার ঘটনায় সম্পৃক্তদের ব্যাপারে সরকারের হাতে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার ইঙ্গিত দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এদিকে কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে দেশের অন্যান্য স্থানে পূজামণ্ডপ, মন্দির, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। এ সব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। ১৮ অক্টোবর পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আরও কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন। আটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নোয়াখালীর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচটি মামলা হয়েছে কুমিল্লায়। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৫৬২। গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪০ জনকে। চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে চারটি। এসব মামলায় অজ্ঞাতসহ ১ হাজার ৪৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯৩ জন। এ ছাড়া চাঁদপুর, ফেনী ও গাজীপুরে তিনটি করে মামলা হয়েছে। এদিকে গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে।