শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদটপসংসদেও জিয়ার কবর নিয়ে বিতর্ক, প্রমাণের দাবি আ. লীগের

সংসদেও জিয়ার কবর নিয়ে বিতর্ক, প্রমাণের দাবি আ. লীগের

রাজপথের পর বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর বির্তকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে জাতীয় সংসদেও।  বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা বিষয়টির অবতারনা করে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনলে পাল্টা বক্তব্যে তা প্রমাণ করার দাবি জানান সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা। ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে জাতীয় আর্কাইভ অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ রহিতকরণ বিলের জনমত যাচাই বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা নয়, বলে সরকার একটা প্রচারণা চালাতে চায়। কিন্তু তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা এটা জাতীয় আর্কাইভেও লেখা আছে। এ ধরনের বক্তব্য একপাঞ্জ করা উচিত।

তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানে মৃত্যুর সময়ও জাতীয় সংসদ ছিল। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাও সেখানে ছিলেন। সংসদে যে আলোচনা হয়েছে তার প্রসেডিংগুলো আছে। কেউ মারা গেলে পোস্ট মর্টেম লাগে। জিয়াউর রহমানেরও পোস্টমর্টেম হয়েছে। জেনারেল এরশাদ এখন জীবিত থাকলে লজ্জা পেয়ে মুখ লুকাতেন। অসত্য কথা না বলাই ভালো।

বগুড়ার সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যোনে জিয়াউর রহমানের কবরে মরদেহ নেই, সেটা আপনারা কীভাবে জানলেন? আপনারা তো প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় নয়, এখন কেন এই সব কথা বলছেন? আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করি, শহীদ জিয়াউর রহমানকেও শ্রদ্ধা করি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকেও আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এখন কেন এত কথা?

জবাবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এস এ খালিদ বলেন, আমরাও চাই বিকৃত ইতিহাস চর্চা বন্ধ হোক। কারণ তাহলে জিয়াউর রহমানের ভাঙা স্যুটকেসটার গল্প বন্ধ হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিজেরই উচিত প্রশ্ন করা, স্বামী ভেবে কাকে ফুল দিচ্ছেন, কাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। ইতিহাস বিকৃতির সূচনা হয়েছে বিএনপির হাত ধরেই। কারণ বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর পর থেকে জাতীয় আর্কাইভে বাংলার বাণীর কোনো কপি নেই। পরে বিলের সংশোধনীর আলোচনায় অংশ নিয়ে আরেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ইতিহাস যখন রাজনীতিবিদরা লেখেন, আইনের অংশ হয়ে যায়, তখন তো মুশকিল হয়ে যায়। সরকার এখন চলছে আমাদের মতে অমত কার নীতিতে। আমরা মাত্র ২/৩ জন কথা বলি, তাও আপনার মানতে পারেন না। জিয়াউর রহমান ছিলেন গণতন্ত্রের রুপকার, আধুনিক অর্থনীতির রুপকার। সংসদে উনারা উনাদের কথা বলবেন, আমরা আমাদের কথা বলবো। ইতিহাস সব সময় জয়ীর হাতে লেখা হয় বলেই হয়তো, সত্য জানতে সময় লাগে।

যতদিন পর্যন্ত দলীয় চশমা দিয়ে ইতিহাস দেখা হবে ততদিন পর্যন্ত কোনো লাভ হবে না। ৪০ বছর পর জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে বির্তক সরকারে সব ব্যর্থতা, ভোটচুরি, গণতন্ত্রহীনতা থেকে চোখ অন্য দিকে সরিয়ে নিতে বলেন তিনি। জবাবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতে রুমিন ফারহানাকে ইঙ্গিত করে বলেন, জন্মের পর কারো কারো মুখে মধু দিতে বোধহয় তার বাবা-মা ভুলে গেছেন। অন্তত একজন বক্তার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।

তিনি বলেন, অসত্য, মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে যারা ইতিহাস রচনা করতে চান, তাদের সমস্যা। তারা বলছেন, ইতিহাস লিখতে শতবছর লাগে। তাহলে ৪০ বছর পর বির্তক হলে সমস্যা কোথায়। তিনি বিএনপিকে প্রস্তাব দেন, বিজ্ঞানভিত্তিক কমিটি করেন, আপনারাই করেন, প্রমাণ করেন সেখানে জিয়ার লাশ আছে। সমস্যা কোথায়? বিএনপি কেন এটাকে এড়িয়ে যেতে চায়?

এ সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পটোয়ারি বলেন, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। ইতিহাস শিক্ষা দেয়। ইতিহাস বিকৃতি বিএনপিও করে। বিএনপি দাবি করে, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান, তিনি বেঁচে থাকতে কোনদিন এ দাবি করেননি। বিএনপিকে আগে ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করতে হবে। এরপর আওয়ামী লীগেক ইতহাস বিকৃতি বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ