বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনসিডিএতে ভূমি নিবন্ধন খাতে ফাইল অনুমোদনে দীর্ঘ সুত্রিতায় ক্যাব চট্টগ্রামের উদ্বেগ

সিডিএতে ভূমি নিবন্ধন খাতে ফাইল অনুমোদনে দীর্ঘ সুত্রিতায় ক্যাব চট্টগ্রামের উদ্বেগ

একদিকে করোনা মহামারী, অন্যদিকে সরকারী-বেসরকারী অফিস আদালতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু নেই। সেখানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)তে চলছে তুগলকি কান্ড। ভূমি নিবন্ধনের প্রত্যয়ন পত্রের জন্য সিডিএতে দাখিলকৃত ফাইল বছরের পর বছর পড়ে থাকলেও অনুমোদন না হবার ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুস সালামের সময়ে যেখানে ১ সপ্তাহে ভূমি নিবন্ধনের ফাইল অনুমোদন হবার নজির থাকলেও বর্তমানে ৩-৪ বছরেও ফাইল অনুমোদন না হবার ঘটনায় ভুক্তভোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। এদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আবারও প্লট ও ফ্ল্যাট ব্যবসায় ঝুঁকলেও সিডিএ এর অভ্যন্তরে এ ধরনের নজিরবিহীন ভোগান্তি সিডিএর সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে। তাই সরকারী সেবা সংস্থা হিসাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এর অভ্যন্তরে জঠিলতা দূরীকরণ করে সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

০২ জুন ২০২১ইং গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানের কারনে সেবা প্রার্থীরা এখন সরকারী অফিস-আদালতে না গিয়েও অনলাইনে সব ধরণের সেবা পাচ্ছেন। কিন্তু ঠুনকো অজুহাতে ভূমি নিবন্ধনের অনাপত্তি ছাড়পত্র প্রদানের মতো ঘটনায় বছরের পর বছর কাল ক্ষেপনের কারনে গ্রাহকরা নানা জঠিলতায় ভুগছেন। বিশেষ করে যারা ঋন নিয়ে ভূমি, ফ্ল্যাট কিনেছেন তাদেরকে ঋনের বিপুল পরিমান সুদ গুনতে বাধ্য হতে হচ্ছে। এছাড়াও সেবা প্রদানকারীদেরকে সরকার ঘোষিত সিটিজেন চার্টাড অনুযায়ী সেবা প্রদানের নির্ধারিত সময়ের পুরোপুরি বরখেলাপ।

নেতৃবৃন্দ আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চট্টগ্রাম উন্নয় কর্তৃপক্ষের আওতাধীন আবাসিক এলাকাসমুহে ভূমির মালিকানা হস্তান্তরে অতিরিক্ত ফিস নির্ধারনের কারনে ভূমির হস্তান্তর, জমির রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য জঠিলতায় একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। সিডিএ’র আওতাভুক্ত আবাসিক এলাকা সমুহে জমি বিক্রি, হস্তানান্তর থমকে আছে। অনেকে প্রয়োজনে জমি কিনলেও অতিরিক্ত নিবন্ধন ফিসের কারনে ভূমির নিবন্ধন করতে পারছেন না। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন আবাসিক ও বানিজ্যিক এলাকায় কাটা প্রতি ভূমি হস্তানান্তর ফিস ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, আর তার উপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ এবং মৌজা ভ্যালু কাটা প্রতি ৪৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত করায় জমি ক্রয় বিক্রয় নিবন্ধন বন্ধ আছে। অনেকেই হেবা বা চুক্তিনামা করে আপাতত কাজ সারছেন। ফলে সরকার একদিকে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন। আবার সিডিএ এর আওতাভুক্ত আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা সরকারের পাশাপাশি সিডিএকেও দুই ধরনের রেজিস্ট্রেশন ও হস্তান্তর ফিস দিতে বাধ্য হচ্ছেন। যা অনেকটাই এক দেশে দুই আইনের মতো।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন সরকার ভূমি নিবন্ধন খাতে কর বৃদ্ধি করায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার জমি ক্রয়ের আগ্রহ থাকলেও নিবন্ধন খরচের ভয়ে ক্রয় করছেন না। আবার সিডিএ নতুন করে প্লট ও ফ্ল্যাট ব্যবসায় নামলে মানুষ নতুন করে আর একটি ভোগান্তিতে পড়বে। যা সাধারন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে পারে। তাই অবিলম্বে দ্রুত ভূমি নিবন্ধন ছাড়পত্র প্রদান, নিবন্ধন খাতে ফিস কমানোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন আবাসিক এলাকাসমুহে ভূমির মালিকানা হস্তান্তরের অতিরিক্ত ফিস কমানো উচিত বলে মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ