গত বছরের তুলনায় এই বছর করোনা সংক্রমণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুুষ অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রিটিক্যাল নিউমোনিয়া বেড়ে যাচ্ছে। এ জন্য আইসিইউর প্রয়োজন বেশি হচ্ছে।
করোনার উপসর্গ ছাড়াই অবসাদগ্রস্ত, হালকা জ্বর-গা ব্যথা হচ্ছে। পরে কাশি-জ্বর বেড়ে গেলে পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত। তত দিনে দেখা যাচ্ছে ফুসফুস আক্রান্ত হয়ে গেছে। তখন আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হচ্ছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি বেশি হচ্ছে। তাঁদের জ্বর বা কাশি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
সার্বিকভাবে আমাদের আইসিইউ বেডের ঘাটতি আছে আগে থেকেই। গত বছরের চেয়ে এবার আইসিইউ ম্যানেজমেন্টে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। করোনা শুরুর বছর আইসিইউ বেডের জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন ছিল। আইসিইউ মানে চিকিৎসা সরঞ্জামের পাশাপাশি দক্ষ লোকবল। এবার আইসিইউ বেডের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম কিছুটা বেড়েছে। তবে এ বছরও দক্ষ লোকবলের অভাব আছে। করোনা আক্রান্ত ৮০-৮৫ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হচ্ছে না। বাকি ১৫-২০ শতাংশ রোগীর মধ্যে ৩-৫ শতাংশ রোগীর আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হচ্ছে। বয়স্ক, হৃদরোগ, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে আইসিইউ বেড প্রয়োজন হচ্ছে।
হাসপাতালে ভর্তির পর কারো চার-পাঁচ লিটার অক্সিজেন লাগে। অক্সিজেনের পরিমাণ যদি বাড়তে থাকে তাহলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এ ছাড়া ফুসফুসের সংক্রমণ বাড়লে কিংবা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে গেলে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র প্রয়োজন হয়। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা আইসিইউ বেডের পরামর্শ দেন। আইসিইউতে সব রোগীর জন্য ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয় না। আইসিইউ বেডের ব্যয় সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে অনেক বেশি। ওষুধের খরচসহ রোগীর কেমন সাপোর্ট প্রয়োজন হচ্ছে, তার ওপর এই ব্যয় নির্ভর করে। সরকারি হাসপাতালে সরকার খরচ দিচ্ছে। এ জন্য ব্যয়ও কম হচ্ছে।
ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ
কনসালট্যান্ট, মেডিসিন ও আইসিইউ বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল।