ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পসহ ৪২৯ কোটি টাকার ৪টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ২৮ অক্টোবর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২৮তম বৈঠকে প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য ৪টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের ২টি এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১টি করে প্রস্তাবনা রয়েছে। অনুমোদিত ৪টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৪২৮ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার ২১২ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ১৭৬ কোটি ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৮৫ টাকা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ ২৫২ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৭ টাকা।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা ওয়াসার অধীন ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ নং-ICB-02.12 কাজের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান জার্মানির লুডুইউং প্রিফিয়ার হুচন্ড টাইফবু জিএমবিএইচ-কে নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৬৪ কোটি ৯ লাখ ৪ হাজার ৪১৯ টাকা। প্যাকেজের আওতায় মডস জোন-৭ এলাকায় মোট ১৬৩.৯৫ কি.মি. পানির লাইন পুনর্বাসন করে ৭টি ডিস্ট্রিক্ট মেট্রান্ড এরিয়া (ডিএমএ) কমিশনিংসহ এক বছর পর্যন্ত নেটওয়ার্ক অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজ।
তিনি জানান, এলজিইডির আওতাধীন ‘রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নের সহযোগী পরামর্শক হিসেবে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডেভেলপমেন্ট ডিজাইনিং কনসালটেন্টস লিমিটেড বাংলাদেশ, জার্মানির জিআইটিইসি-আইজিআইপি জিএমবিএইচ, দেব কনসালটেন্টস লিমিটেড এবং রিসোর্স প্লানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ৫০৮ টাকা।
বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলি হলো- ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। যৌথভাবে পূর্ত কাজটি সম্পাদন করবে এলএ এবং টিটিএলএ। এতে মোট ব্যয় হবে ৫০ কোটি ৬২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩০ টাকা।
এছাড়া ‘পালবাড়ী-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী জাতীয় মহাসড়ক (এন-৭০৭) এর মনিহার হতে মুড়ালী পর্যন্ত ৪-লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের পূর্ত কাজ সম্পাদনে দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে কমিটি। যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে আতাউর রহমান খান লিমিটেড এবং মাহবুব ব্রাদাস প্রাইভেট লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়েনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার ৯৫৫ টাকা। এই প্যাকেজের আওতায় সড়ক বাঁধ নির্মাণ, বিদ্যমান পেভমেন্ট নতুন করে নির্মাণ, স্লো মোভিং ভেহিকেল ট্র্যাক লেন, সার্ফেসিং মূল পেভমেন্ট, সার্ফেসিং এসএমভিটি লেন, রিজিভ পেভমেন্ট, আরসিসি ড্রেন কাম ফুটপাত, আরসিসি ক্রস ড্রেন, নিউ জার্সি ব্যারিয়ার, সড়ক ডিভাইডার, সাইন, সিগনাল, গাইড পোস্ট, রোড মার্কিং ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।
এর আগে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৯তম সভায় একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের (ইনার ও আউটার চ্যানেলে) জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং’ প্রকল্পটি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এর ধারা ৬৮(১) এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) মোতাবেক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল এর মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (DPM) বাস্তবায়নের প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।