বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদটপহাসপাতাল ছাড়লেন ইউএনও ওয়াহিদা

হাসপাতাল ছাড়লেন ইউএনও ওয়াহিদা

দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম। ১ অক্টোবর দুপুরে তিনি পায়ে হেঁটে হাসপাতাল ছাড়েন। তবে থেরাপির জন্য তাকে মিরপুরের সিআরপি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ওয়াহিদার চিকিৎসকরা জানান, ওয়াহিদার ডান হাত ও ডান পায়ের শক্তি ফিরে এসেছে। যদিও এখনো শতভাগ শক্তি ফেরেনি। সেজন্য তাকে রাজধানীর মিরপুরে সিআরপিতে রেফার্ড করা হয়েছে। ওখানে তাকে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হবে। ফিজিওথেরাপিতে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতার থেকে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিদায় দেওয়ার পর তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, যখন তিনি আহত হয়ে এখানে ভর্তি হন তখন তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়।

অস্ত্রোপচারের পর প্রথমে তার ব্রেন ঠিক মতো কাজ করছিল না, প্রেশার ঠিক ছিল না। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে তিনি একটু সুস্থ হলেও ডানপাশটি কোনোভাবেই কাজ করছিল না। তবে এক সপ্তাহ পর থেকে তিনি আস্তে আস্তে সুস্থ হতে শুরু করেন। শরীরের ডান পাশটা নাড়াতে শুরু করেন। মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন আরও বলেন, এরপর বিগত প্রায় তিন সপ্তাহের চিকিৎসায় আল্লাহর রহমতে তিনি এখন ডানপাশ পুরোটাই নাড়াতে পারছেন এবং হাঁটতে পারছেন। একটু আগে তিনি হেঁটে অ্যাম্বুলেন্সে উঠে গেছেন। এখানে তার অস্ত্রোপচারটা শতভাগ সাকসেসফুল হয়েছে বলতে পারি। বর্তমানে ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বলেন, তার ডান হাত ডান পায়ের শক্তি ফিরে এসেছে, যদিও শতভাগ শক্তি তার ফেরেনি। সেজন্য তাকে আমরা রাজধানীর মিরপুরে সিআরপিতে রেফার্ড করেছি। ওখানে তাকে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হবে। আশা করি, ফিজিওথেরাপিতে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি, তার ব্রেইন ড্যামেজ ছিল, মাথার খুলির হাড্ডি ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতর ঢুকে গিয়েছিল। সেটা আমরা অপারেশন করে তুলে দিয়েছি। ব্রেইনের ড্যামেজটা রিকভার হয়ে গেছে। তিনি এখন হাঁটতে পারছেন। উনার শারীরিক রিকভারের যা অবস্থা তাতে আশা করা যায় ২/১ সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আশা করছি উনার ডিজেবিলিটি থাকবে না। আমরা তাকে এক মাস পর ফলোয়াপে আসতে বলেছি।

জাহেদ হোসেন আরও বলেন, শুরুতে তিনি স্ট্রেচারে শুয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন, আল্লাহর রহমতে তিনি সুস্থ হয়ে হেঁটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। এটা আমাদের গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট এবং তার জন্য এটা একটা বিরাট সাফল্য বলতে পারি। যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হয়েছিল, সেখান থেকে তিনি রিকভার করেছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে ওয়াহিদ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন এবং কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এই চিকিকিৎসক।

গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয়। পরদিন সকালে তাদের প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় এনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর ওমর আলী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর তাকেও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ওয়াহিদা খানমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী সচিব) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে রংপুরের পীরগঞ্জে ইউএনও হিসেবে কর্মরত তার স্বামী মো. মেজবাউল হোসেনকেও ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ