বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়এনআরবি ব্যাংকে প্রভাব খাটিয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন মাহতাবুর রহমান

এনআরবি ব্যাংকে প্রভাব খাটিয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন মাহতাবুর রহমান

প্রভাব খাটিয়ে এনআরবি ব্যাংকে একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আগের চেয়ারম্যানকে সরিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ অভিযোগ করেন। ছয় পাতার এ অভিযোগপত্রে প্রায় দুই ডজন অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

২০১৯ সাল শেষে এনআরবি ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬১ কোটি টাকা। আর নিট লোকসান ছিল ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তিন হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে এ পরিমাণ খেলাপি উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। সেখানে আরও বলা হয়, ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকে সরিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ দখল করেন মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান তাতইয়ামা কবিরের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি লুটেরা চক্র এ ব্যাংকটিকে তলাবিহীন ঝুড়িতে রূপান্তরের সব কর্মকৎপরতা সম্পন্ন করেছে। এনআরবি ব্যাংকের আমানতের জিম্মাদারি নিয়ে বেশিরভাগ পরিচালক এখন শঙ্কিত। ব্যাংক পরিচালনায় চেয়ারম্যানের সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ধারাবাহিক ব্যর্থতার দায় বইতে না পেরে এনআরবি ব্যাংক এখন লোকসানের চোরাবালিতে হারিয়ে যেতে বসেছে।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এনআরবি ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মাহতাবুর রহমান প্রতারণা ও লুকোচুরি শুরু করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোনো চিঠি ও পরিদর্শন প্রতিবেদন সম্পর্কে পরিচালনা পর্ষদকে অন্ধকারে রাখার নীতি গ্রহণ করেন। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাস পরই ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার অনুকূলে তাকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করে। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রেখে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নজর এড়িয়ে মাহতাবুর রহমান উচ্চ আদালতের স্টে অর্ডার নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এনআরবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। শুধু তাই নয়, এনআরবি ব্যাংকের পর্ষদের অগোচরে চেয়ারম্যান হিসেবে ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, ৯ অক্টোবরসহ পরবর্তী ক্ষেত্রে সব করেসপন্ডেন্ট ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করেন তিনি, যদিও আইন অনুযায়ী মাহতাবুর রহমানের এসব কর্মকাণ্ড ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নামে-বেনামে স্ত্রী, ছেলে, ভাই, ভাতিজাসহ আত্মীয়-স্বজনের নামে শেয়ার কিনেছেন মাহতাবুর রহমান। এনআরবি ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জমিদার প্রথার মতোই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কায়েমের লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছেন তিনি। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক সব প্রস্তুতিই তার সমাপ্ত।

এনআরবি ব্যাংক গড়ে তোলার সময় প্রতি বছর ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নতুন কেউ নির্বাচিত হবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর সে সিদ্ধান্তের কথা ভুলে গেছেন মাহতাবুর রহমান। তিনি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর পরিবারতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছেন। মাহতাবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ব্যাংকটি এখন জিম্মি। এক্ষেত্রে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে থাকা দুর্নীতিবাজ একটি চক্র। ছোট ও অপেক্ষাকৃত নিরীহ প্রকৃতির উদ্যোক্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এনআরবি ব্যাংক থেকে বিতাড়িত করছেন তিনি।

এনআরবি ব্যাংক যাত্রা করার সময় শুধু মাহতাবুর রহমানই শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। কিন্তু পরে তার পরিবারের সাত সদস্যের নামে তিনি শেয়ার কিনেছেন। বর্তমানে এনআরবি ব্যাংকে মাহতাবুর রহমান ও তার পরিবারের শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। নামে-বেনামে মাহতাবুর রহমানের কিনে নেওয়া প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হয়েছে ১৮-২০ টাকা দরে। অথচ সরকারের কর ফাঁকি দিতে শেয়ারের দর দেখানো হয়েছে ১১-১২ টাকা করে। অনৈতিক এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাহতাবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরোধিতা করায় এনআরবি ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির (ইসি) সব ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইসি কমিটির সব কাজ চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। ইসি কমিটির সব ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যবসায়িক বৈঠক থেকে শুরু করে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। এক্ষেত্রে পছন্দের কিছু গ্রাহককে ঋণ পাইয়ে দিতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এনআরবি ব্যাংকে একটি দুর্নীতির দুষ্ট চক্র তৈরি হয়েছে।

এনআরবি ব্যাংকের সিআরএম, করপোরেটসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর সব নথিপত্র চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সরিয়ে নিয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, সরিয়ে নেওয়া ফাইলগুলোয় জাল নথি ঢুকিয়ে দিয়ে অপছন্দের যে কাউকে হেনস্তা করা হবে। মাহতাবুর রহমান ও তাতাইয়ামা কবিরের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের সহযোগী না হওয়ায় এনআরবি ব্যাংকের অনেক যোগ্য ও দক্ষ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেনকেও দীর্ঘ মেয়াদে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে দুর্নীতিতে সহযোগী না হলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

এনআরবি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান তাতাইয়ামা কবির জনশক্তি রপ্তানিকারক। জাপানে তার কথিত ব্যবসা রয়েছে। তবে তিনি বছরে দু-একবার জাপানে যান এবং বাকি সময়ের পুরোটাই এনআরবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল-সন্ধ্যা উপস্থিত থাকেন। তার জন্য ব্যাংকের প্রধান কর্যালয়ে একটি কক্ষ বরাদ্দ করা হয়েছে। এ কক্ষটি এনআরবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে টর্চার সেল নামে পরিচিত। ব্যাংকের যে কোনো কর্মীকে যখন-তখন এ কক্ষে ডেকে আনা হয়। হুমকি-ধমকি দিয়ে কর্মকর্তাদের সবসময় তটস্থ রাখাই তার কাজ। চেয়ারম্যানের নির্দেশে তিনি নিয়মিত দিনের দ্বিতীয়ার্ধে ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের তার কামরায় ডেকে নিয়ে দৈনন্দিন কাজের হিসাব নেন। একই সঙ্গে বাকি সময়ে কী করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, চেয়ারম্যান ছাড়া অন্য কোনো পরিচালকের জন্য ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কোনো কক্ষ বরাদ্দ রাখার বিধান নেই। কেবল চেয়ারম্যানেরই ব্যাংকে অফিস করার অনুমতি আছে। অথচ তাতাইয়ামা কবির প্রতিদিন নিজ দপ্তরে বসে অফিস করছেন। তার কক্ষটি ব্যাংকের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে ‘ভিসি রুম’ নামে পরিচিত।

চলতি বছরের রমজানে এনআরবি ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (সিএসআর) থেকে দুই কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেন চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান। ব্যাংকের এক কোটি টাকার বেশি যে কোনো ব্যয়ের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে টেন্ডার আয়োজনের বিধান রয়েছে। কিন্তু মাহতাবুর রহমান তার ভাই ওলিউর রহমানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যাংকের এ অর্থ ব্যয় করেছেন। তারা দাবি করেছেন, দুই কোটি টাকা দিয়ে গরিবের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়েছে, যদিও এ ব্যয়ের কোনো হিসাব পর্ষদে দাখিল করা হয়নি। ব্যাংকের টাকা দিয়ে দেশের কোন এলাকার গরিবের মাঝে খাবার দেওয়া হয়েছে, কতজনকে দেওয়া হয়েছে, এগুলো কোথা থেকে কেনা হয়েছে, কখন দেওয়া হয়েছে, কিংবা আদৌ দেওয়া হয়েছে কি নাÑতার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে যথাযথভাবে তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

মাহতাবুর রহমান দুবাইয়ে আল হারামাইন নামে একটি পারফিউম কোম্পানির মালিক। কিন্তু কোম্পানিটির কর্মকাণ্ড ঢাকায় থেকে পরিচালিত হয়, যদিও ঢাকায় আল হারামাইনের কোনো অফিস নেই। এনআরবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়কেই তিনি নিজ কোম্পানির দপ্তর হিসেবে ব্যবহার করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে আল হারামাইনের শাখা খোলায় এবং নিজ কোম্পানির কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত এনআরবি ব্যাংকের মানবসম্পদ ব্যবহার করছেন। ব্যাংকের সব মার্কেটিং কর্মকাণ্ডে মাহতাবুর রহমান তার কোম্পানি আল হারামাইনের নাম যুক্ত করে কো ব্র্যান্ডিং করেন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই মাহতাবুর রহমানের মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের তারিখের সঙ্গে মিল রেখে ২৮ জুলাই সিলেটে আয়োজন করা হয় এনআরবি ব্যাংকের এজিএম। ওই বিয়েতে ব্যাংকের গাড়ি ও লোকবল ব্যবহার করা হয়েছে। পরে একই বছরের ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর চেয়ারম্যানের ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংগতি রেখে ২৪ ডিসেম্বর সিলেট মেডিকেলে এনআরবি ব্যাংকের শাখা খোলা হয়। এ অনুষ্ঠানেও তিনি ব্যাংকের বেশ কয়েকটি গাড়ি ব্যবহার করেন। এনআরবি ব্যাংকের বোর্ড সেক্রেটারিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাকে দিয়ে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র ইস্যু করিয়েছেন তিনি। মাহতাবুর রহমানের প্রতিটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে ব্যাংকের অন্তত ১০টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। একটি গাড়ি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য সারা বছর সিলেটে অবস্থান করে।

ব্যাংকের কাজ ছাড়াই যতবার মাহতাবুর রহমান সিলেট সফরে যান, ততবারই ওই অঞ্চলের সব ম্যানেজারকে অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে যেতে হয়। এমনকি চেয়ারম্যানের স্ত্রী সিলেট গেলেও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিমানবন্দরে গিয়ে অভ্যর্থনা জানাতে বাধ্য করা হয়। এভাবে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী বা প্রটোকল কর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

মাহতাবুর রহমান হেলিকপ্টারে চড়ে এনআরবি ব্যাংকের জাজিরা শাখা, খুলনা শাখা, চাটখিল শাখা ও ফরিদপুর শাখা উদ্বোধন করতে গেছেন, যদিও ওই শাখাগুলোর পরিস্থিতি সিলেট মেডিকেল শাখার মতোই দৈন্যদশায় আছে। পরিচালনা পর্ষদের আপত্তি উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান অনেক ভুল ও অনুপযুক্ত স্থানে, যেমন জাফলংয়ে ব্যাংকের শাখা খুলেছেন। ক্ষমতার জোরে এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করে তার নিজের অযোগ্য অনেক প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া নিজের দুই আপনজন ও ব্যক্তিগত উপদেষ্টাকে ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনীত করেছেন। তাদের প্রতি মাসে আইনবহির্ভূতভাবে এক লাখ টাকা করে মাসোহারা দেওয়া হয়। চেয়ারম্যানের নির্দেশে কোম্পানি সেক্রেটারি আপ্যায়নের ব্যয় বেশি দেখিয়ে এ অর্থের ব্যবস্থা করেন।

পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের জন্য একটি প্যানেল গঠন করেছিল। কিন্তু এ প্যানেল উপেক্ষা করে তিনি নিজেই উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেন। যে ব্যক্তিকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর এনআরবি ব্যাংকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগের ক্ষেত্রেও পরিচালকদের সব আপত্তি মাহতাবুর রহমান উপেক্ষা করেছেন। যাকে এএমডি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি একসময় আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের এমডি ছিলেন। অথচ আমরা জানি এ ব্যাংকটি একটি দেউলিয়া ব্যাংক।

এসব দুর্নীতির অবসান করতে গভর্নরের কাছে তিনটি অনুরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলোÑদ্রুততম সময়ের মধ্যে এনআরবি ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করা; দ্বিতীয়ত, গত চার বছরে এনআরবি ব্যাংকে সংগঠিত অনিয়ম-দুর্নীতির সত্য উদ্ঘাটনে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি বিশেষ পরিদর্শক দল পাঠানো এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তৃতীয়ত, ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড় করাতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া। এনআরবি ব্যাংকের এসব দুর্নীতির বিষয়ে জানতে মাহতাবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গভর্নর ছাড়াও মাহতাবুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের কপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থমন্ত্রী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইইউ) প্রধানের কাছে দেওয়া হয়েছে। – শেয়ার বিজ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ