মঙ্গলবার, মে ১৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়দেশের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে : প্রধানমন্ত্রী

দেশের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের ভোগান্তি কমাতেই  মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের কাজ দ্রুত শেষ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) ফ্লাইওভার উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের আমলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আমরা যে কথা বলি, সে কথা আমরা রাখি। ভবিষ্যতের জন্য ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশকে সবার বাসযোগ্য করা হবে। ঢাকাকে বাসপোযোগী করতে সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ফ্লাইওভার উদ্বোধন করে প্রথম টোল আমি দিয়েছি। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ের যৌথ উদ্যোগে প্রথম ফ্লাইওভার এটি।

তিনি বলেন, ঈদের আগে প্রায় ৩০টি জেলার মানুষের যাতায়াতের সমস্যা দূর করতে এই ফ্লাইওভার অনেক উপকার করবে। কারণ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩০টি জেলার সংযোগ সড়ক এটির। রাজধানীবাসীর জন্য এটা ঈদ উপহার। ঈদের আগে উদ্বোধনের কারণে মানুষের কষ্ট লাঘব করবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দিতে আসি, নিতে আসি না। ঢাকাকে যানজট মুক্ত করতে আমরা ফ্লাইওভার, ওভারপাসসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকার সঙ্গে আশপাশের জেলার যোগাযোগ সহজ করতে কমিউটার ট্রেন চালু করেছি। তিনি বলেন, রেল নেটওয়ার্ক আরও বাড়াতে আমরা কাজ করছি, যেন মানুষ কম খরচে ভালোভাবে যাতায়াত করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বুড়িগঙ্গার প্রচুর বর্জ্য পরিশোধন করা হয়েছে। আমরা অনেকটাই দূষণমুক্ত করেছি। এখন অন্তত কিছু জলজ প্রাণী দেখা যায়। কিন্তু মানুষেরও সচেতনতা থাকা উচিত। মানুষ যদি নদীতে জঞ্জাল ফেলে তাহলে আমরা পরিষ্কার রাখবো কীভাবে।

স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়। আমি তখন বক্তব্য দিচ্ছিলাম। আমার ঠিক ডান পাশে হানিফ ভাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা আমাকে ঘিরে রাখেন। গ্রেনেডের স্প্লিন্টার হানিফ ভাইয়ের মাথায় এসে লাগে। রক্ত তার মাথা থেকে আমার গায়ে টপটপ করে পড়তে থাকে। আমরা তার নামে এ ফ্লাইওভার করেছি। এসব কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে যান।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে অনেক সমস্যা ছিল। আমরা তা সমাধান করেছি। সায়েদাবাদের পানি শোধনে ফেইজ ১, ২ শেষ করেছি। পদ্মা নদী থেকে পানি এনে বিশুদ্ধ করে ঢাকাবাসীর পানি সরবরাহ বাড়ানো হবে। গ্যাসের সসস্যাও সমাধান করেছি। আর বিদ্যুতের কথা তো বলার কিছু নেই। সাড়ে চার বছরে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যু‍ৎ উপাদন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। কুর্মিটোলায় ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, আগারগাঁওয়ে নিউরোসাইন্স ইনস্টিটিউট, এক হাজারের মতো বিআরটিসি বাস ক্রয় করা হয়েছে। সারা ঢাকা শহরজুড়ে রিং রোড তৈরিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসময় তিনি সরকারি বেসরকারি পার্টারনারশিপের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরা সবকিছু করবো। কারো কাছে হাত পেতে নয়। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক মেধা রয়েছে। এছাড়া ফ্লাইওভার নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

 উদ্বোধন:

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী-কুতুবখালী প্রান্ত থেকে ফলক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই গুলিস্তান পয়েন্ট থেকে গাড়িতে করে ফ্লাইওভার  ব্যবহার করে কুতুবখালী প্রান্তে যান। ফলক উন্মোচন শেষে তিনি নিজে ফ্লাইওভার ব্যবহারের টোল দেন।

ফ্লাইওভারেরর নাম ‘মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার’। প্রথমবারের মতো সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এটি নির্মাণে বিনিয়োগ করেছে ওরিয়ন ইনফ্রাশ্চাকচার লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ১০৮ কোটি টাকা। ঢাকা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে এই ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে। ২০১০ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ফ্লাইওভারে ওঠার সময় টোল দিতে হবে না। নামার সময় সাতটি বেরোনোর পথে টোল দিতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ