শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদটপমাইলেজ আগে না গাড়ির গ্রেড আগে? গাড়ি কিনতে যে ভুলটা আমরা করে...

মাইলেজ আগে না গাড়ির গ্রেড আগে? গাড়ি কিনতে যে ভুলটা আমরা করে ফেলি

যখন আমরা একটা গাড়ি কিনতে যাই সবাই আগে দেখি গাড়ি কোন গ্রেডের। এটা কি 4 পয়েন্টের গাড়ি নাকি 2 পয়েন্টের। যাইহোক এটা এক্সপ্লেইন করার আগে একটা কথা বলতেই হয় এখন মানুষ অনেক সচেতন, অনেক এওয়্যার। আগে তো মানুষ অকশন গ্রেডই চিনতনা শীট চেনা পরের কথা। তখন শো-রুমে গিয়ে ক্লাস্টারে যত মাইলেজ দেখত পছন্দ হলে নিয়ে নিত। এই চান্সে শো-রুম ওয়ালারা ১.৫ লাখের গাড়ি 15000km এ নিয়ে আসত। এখনও সেটা করা সম্ভব ইভেন অনেকে করছেও। ৫০০ টাকা দিলে 2 লাখের গাড়ি 2 হাজারে আনা কোন ব্যাপারই না। যদিও সময়ের সাথে এখন অনেক শো-রুম আপডেটেড হয়ে গিয়েছে কিন্তু এখনো কিছু কিছু শো-রুমে এই প্রাকটিসটা রয়েই গেছে। প্রি-অর্ডারে তো আগে থেকেই বলে দেওয়া হয় এত মাইলেজ কিন্তু মানুষ এত এত সচেতন হওয়ার পরেও অনেক শো-রুম এখনও অভ্যাসটা ছাড়তে পারছেনা। যাইহোক দেখার সময় চেক করে কিনবেন তাহলে আর ধরা খাওয়ার চান্স নাই। এখন কথা বলা যাক অকশন গ্রেড আগে নাকি মাইলেজ আগে এই ব্যাপারে। গাড়ি কিনতে গেলে আমরা প্রথমত গাড়ির এই ২টা পয়েন্টকে বেশী গুরুত্ব দেই। আপনি যখন কনজিউমার বা ক্রেতা তখন আপনি স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি নিয়ে A-Z জানেন না। জানা পসিবলও না। এখন আপনি এই গাড়ি কেনার আগে গাড়ির ব্যাপারে জানার জন্য দুইটা ভুল কাজ করেন। প্রথমত সো-রুম বলেন/প্রি-অর্ডার বলেন যার কাছে থেকেই নেন আপনি তাদের কাছ থেকে নলেজের জন্য যান। এখানেই আপনি প্রথম ভুলটা করেন, আপনি তার কাছে থেকে গাড়ির বেসিক জানতে যান, ফিচার জানতে যান কোন অসুবিধা নাই কিন্তু যে গাড়িটা আপনি কিনতে যাবেন সেটা কেমন জানতে চাওয়া চরম ভুল। দ্বিতীয় ভুলটা করেন ফেসবুকে বিভিন্ন এক্সপার্ট ধরে জানতে গিয়ে। বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে হাজার হাজার এক্সপার্ট আছে তাদের কমেন্টসগুলো আপনার ফাইনাল ডিসিশন হিসেবে নিয়ে দ্বিতীয় ভুলটা কমপ্লিট হয়। ওয়েল তাহলে এখন আপনি করবেন কি?

আপনি যেহেতু গাড়ির ব্যাপারে খুব একটা জানেন না কিন্তু আই বিলিভ আপনি এতটাএ অশিক্ষিত নন যে এনালাইসিসি করতে পারবেন না। আপনাকে ডাটা দিচ্ছি আপনি এনালাইসিস করেন, তারপর একটা ডিসিশানে আসেন। সেলারের কাছ থেকে সাজেশন নেওয়ার দরকার নাই বা গ্রুপে গ্রুপে এক্সপার্ট ধরেও সাজেশন নেওয়ার দরকার নাই। আপনার যেটা ভাল মনে হবে আপনি সেদিকেই যাবেন। তো এখন আমরা আপনাকে বলবো মাইলেজ আর অকশন পয়েন্ট এই দুইটার ব্যাপারে। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ুন নিজেই বুঝতে পারবেন কোনটা বেশী ইম্পর্টেন্ট।

মাইলেজ জিনিসটা হলো একটা গাড়ি টোটাল কত হাজার কিলো চলেছে সেটা। লাইক একটা গাড়ি জাপানে যত হাজার কিলো চলেছে সেটাই গাড়ির মাইলেজ। একটা কথা মাথায় রাখবেন অকশন হাউজ থেকে কখনো মাইলেজ টেস্পার করা হয়না। আপনি যদি লাইভ অকশন থেকে গাড়ি কিনেন তাহলে অকশনে যে মাইলেজ বলা হয়েছে সেটাই রিয়েল মাইলেজ কেন সন্দেহ নাই। তাহলে টেম্পার হয় কিভাবে? টেম্পার হয় সাপ্লায়ারের কাছে। আমাদের দেশের প্রায় ইম্পোর্টাররা গাড়ি ডিরেক্ট অকশন থেকে কিনে না। তারা সাপ্লায়ারের কাছ থেকে কিনে। তো গাড়িটা দেশে পাঠানোর আগে তারা সাপ্লাইয়ারদের বলে দেয় মাইলেজটা একটু কমায় দাও। শুধু এটা না সাপ্লাইয়ার আপনার যে কোন রিকোয়ারেমেন্ট ফিল আপ করে দিতে পারে লাইক যদি বলেন করল্লাকে সানরুফ বানায় দেশে পাঠাও সেটাও সম্ভব। এবার বুঝতে পেরেছেন সাপ্লাইয়ারদের সাথে ইম্পোর্টারদের সম্পর্ক? টেম্পার থেকে বাঁচতে অকশন শীট চেক তো করবেনই সাথে এমন কোন ইম্পোর্টারের কাছ থেকে নিতে পারেন যে আপনাকে লাইভ অকশন থেকে গাড়ি কিনে দিবে। যাইহোক এবার কিছু ট্যাকনিকাল কথা বলি, একটা গাড়ি যত বেশী চলে তার লাইফ সার্কেল ততই কমে আসতে থাকে। একটা গাড়ি যত বেশী চলেছে তার ইঞ্জিন,টায়ার,গিয়ারবক্স সবই তত বেশী ইউজ হয়েছে। সোজা কথায় সেটার কন্ডিশন তত খারাপ। গাড়ি কিনতে গেলে সবার আগে মাথায় রাখবেন এই মাইলেজটাই। গাড়িটা কতো কিলো চলেছে, ইটস ইম্পর্টেন্ট। ধরুন একটা প্রিমিও নন হাইব্রিড যেটা ১ লাখ কিলো চলেছে। আমি বলবো সেটা কেনা যায় কারন এটা নন হাইব্রিড তাই ব্যাটারি নিয়ে চিন্তা নাই। আর আপনি দেখবেন আমাদের দেশে যে প্রিমিওগুলো চলে সেগুলো ২ লাখ বা ২.৫ লাখের বেশী চলছে কিন্তু স্টিল স্টক ইঞ্জিন আছে। এটা আসলে কমন সেন্সের ব্যাপার শুধু প্রিমিও না যে কোন গাড়ি কেনার আগে একটু রিসার্চ করে দেখবেন মিনিমাম কত কিলো চলার পর গাড়িটার ইঞ্জিন চেঞ্জ করার দরকার হয়েছে আমাদের দেশে। তাহলে একটা ভাল আইডিয়া পাবেন আপনার সর্বেচ্চ কত কিলো হলে কেনা যায়, এটা সেলার থেকে আস্ক করার দরকার নাই। সিমিলারলি এবার আসা যাক একটা এক্সিও হাইব্রিড নিয়ে। ধরুন একটা এক্সিও হাইব্রিড ১ লাখ চলেছে। হাইব্রিড গাড়িতে যেহেতু ব্যাটারির একটা ব্যাপার আছে। আপনি নিশ্চয় চাইবেন না নতুন গাড়ি কেনার ১বছর পর ২লাখ টাকা খরচ করে ব্যাটারি চেঞ্জ করতে? তাই এখানে নন হাইব্রিড প্রিমিওর সাথে তুলনা করা যাবেনা। টয়োটা একটা হাইব্রিড গাড়িতে ১.৫ লাখ কিলো পর্যন্ত হাইব্রিড ব্যাটারির গ্যারান্টি দেয় সম্ভবত। এখন আপনি কি সেলারের কথা শুনে প্রিমিওর মতো ১লাখ চলা এক্সিও হাইব্রিড নিয়ে ফেলবেন? অফকোর্স না, দেখতে হবে গাড়িটার ব্যাটারির গ্যারান্টি কত ছিল। যদি দেখেন ১.৫ লাখ তাহলে দেশে এনে ৫০ হাজার চলার পর গ্যারান্টি শেষ তাহলে ওই গাড়ি কেনার ২-৩ বছর পরেই আপনার ব্যাটারি চেঞ্জ করতে হবে।।আর যদি এরকম হয় গ্যারান্টি আছে ১.৫ লাখ আর গাড়ির মাইলেজ ৬০ হাজার।তাহলে এই হাইব্রিড গাড়ি চোখ বন্ধ করে কেনা যায়। এখন সেলার যদি বলে ১লাাখ চলা হাইব্রিড গাড়ি নিয়ে নেন অসুবিধা নাই হাইব্রিড ব্যাটারি না পেলে আমি এনে দিব কস্টিং পরে দেখা যাবে বা ফেসবুক এক্সপার্ট যদি বলে নিয়ে নেন ভাই আল্লাহ ভরসা তাহলে কি আপনি নিয়ে নিবেন? অফকোর্স না,কারন বাংলাদেশে মানুষ একটা গাড়ি অনেকদিন চালানোর প্ল্যান করেই কিনে। সেলারের কথা মতো আপনি ১লাখ চলা এক্সিও হাইব্রিড কিনলে বাকি ওয়ারেন্টী পাচ্ছেন ৫০ হাজারের। আপনি নিশ্চয় মাত্র ৫০ হাজার চালাবেন না গাড়িটা? তাই ডেফিনেটলি এখানে আপনার ফ্রেশ নলেজ ইউজ করতে হবে। আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি কি চান। আপনার চাওয়ার সাথে গাড়িটা ম্যাচ করছে কিনা। রিসার্চ করেন, নিজের ব্রেইনক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ