বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদটপসরকারের একলা চলো নীতির কারণে জনগণ করোনাভাইরাসের প্রচণ্ড ঝুঁকি’র মধ্যে পড়েছে :...

সরকারের একলা চলো নীতির কারণে জনগণ করোনাভাইরাসের প্রচণ্ড ঝুঁকি’র মধ্যে পড়েছে : মির্জা ফখরুল

করোনাভাইরাস বিষয়ে সরকারের দেওয়া তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। সরকার তথ্য লুকাচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি বলছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণে জনগণ করোনাভাইরাসের ‘প্রচণ্ড ঝুঁকি’র মধ্যে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির গুম, খুন ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের পরিবারকে ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করার জন্য যে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল, সেই উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এক কথায় তারা (সরকার) করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করতে গিয়ে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সেই একলা চলো নীতি, তাদের সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থার যে নীতি, সেই নীতির কারণেই আজকে জনগণ প্রচণ্ড রকমের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে যে, সত্য কথাটি আমরা জানতে পারছি না, ইনফরমেশনগুলো আমরা পাচ্ছি না। যে কথাগুলো সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবতার কতটুকু মিল আছে, তা সম্পর্কে সকল জনগণের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রশ্ন এসে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি যে, করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করার জন্য এই সরকারের আন্তরিক হয়ে যেভাবে এগিয়ে আসার কথা ছিল, সেটা তারা আসতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা প্রথম থেকে লক্ষ্য করেছি যে, তাদের মধ্যে প্রচণ্ড রকমের উদাসীনতা ছিল, অবহেলা ছিল। তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। যখন ঘাড়ের মধ্যে এসে পড়ে গেছে, তখন তারা এটিকে সামাল দিতে গেছে। সামাল দেওয়ার মতো শক্তি তাদের ছিল না। আজকে করোনাভাইরাসের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, তাদের যে শাসন ব্যবস্থা, সেটা কতটা ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে। সাধারণ রোগীরা গিয়ে চিকিৎসা পাচ্ছে না।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, তথ্যমন্ত্রী আমাদের গালিগালাজ করেছেন এবং বলেছেন যে, আমরা নাকি শুধু কথাই বলছি, আমরা কোনো কাজ করছি না।

আমরা বিরোধী দল হিসেবে ১২/১৩ বছর তাদের নির্যাতনের পরেও যে কাজটুকু করেছি, আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, আমরা তাদের দল থেকে অনেক বেশি কাজ করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ৭ লাখ পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিদিনই আমাদের এই সংখ্যা বাড়ছে এবং এটা আরও বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন রাজনৈতিক বিতর্কের সময় নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সময় নয়। অহংকার এবং আত্মম্ভরিতা বাদ দিয়ে আসুন সমগ্র জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি, ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র জাতিকে করোনাভাইরাসের যে আগ্রাসন, সেই আগ্রাসন মোকাবিলা করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। সেই উদ্যোগ আপনারা গ্রহণ করুন।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে, সরকার সেটা করছেন না, করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই।

সরকারের শাসন নীতির কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্র যখন উৎপীড়ক হয়ে যায়, রাষ্ট্র যখন নিজেই গুম-খুন করে কিংবা ক্রসফায়ার করে তখন মানুষ গিয়ে কোথায় দাঁড়াবে। আমরা তো তখন সত্যিকার অর্থেই একটা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে পারি না। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, আজকে আমরা এই ধরনের একটা সরকারের নির্যাতনের কবলে পড়েছি, যাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা নির্বাচিত কোনো সরকার নয়।

‘তারা শুধু শক্তির জোরে, বন্দুক-বুলেটের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে। জনগণের প্রতি কোনো রকমের দায়িত্ব নেই।

বিএনপির নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান রুমন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, নাজমুল হাসান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ