পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলার মাটিতে অনেক নেতার জন্ম হয়েছে। কিন্তু বাঙালি জাতি সত্তা ও চেতনার উন্মেষ এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠাসহ সম্মানের আসনে নিয়ে যাওয়া কেবল বঙ্গবন্ধুর নেতেৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে। রাজনীতির ক্ষেত্রে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, মহানুভবতা শেখার জন্য আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে এবং অনুকরণ করতে হবে। তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অদ্ভুদয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ এবং নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা অনুসরণ করে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। সেকারণে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। বঙ্গবন্ধু নিজে ‘‘সোনার বাংলার’’ স্বপ্ন দেখেছেন এবং আমাদের হৃদয়ে গ্রথিত করে গেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বলে গেছেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চায়। সোনার মানুষ গড়ে তুলতে পারলে আমাদের উন্নয়ন কেউ ঠেকাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে সবসময় সোচ্ছার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আমাদের সম্মান ও মানবতাকে সারা বিশ্বে অনেক উর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। তিনি সত্যিকারের ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’।
ড. মোমেন আরো বলেন, সম্প্রতি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যের ‘স্পেকটেটর’ এর রিপোর্ট অনুসারে, মোট জিডিপিতে ১৮৮ শতাংশ সম্প্রসারণসহ গত ১০ বছরে ২৬টি দেশের তালিকার মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড করেছে। বাংলাদেশের দারিদ্র্য সীমা গত দশ বছরে ৪২ শতাংশ থেকে ২০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি দারিদ্রের হার ২৪ শতাংশ থেকে ১০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন যে, আগামী ৫ বছরে দারিদ্রসীমা আরো ৫% নিচে নামিয়ে আনবেন। তিনি বলেন, এক সময় ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ হিসেবে চিহ্নিত বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ। এক সময় আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল কিন্তু এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং বিদেশে রপ্তানিও শুরু করেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানে আমেরিকার শাসনতন্ত্র তৈরি করতে সময় লেগেছিল ১৩ বছর এবং পাকিস্তানের প্রথম শাসনতন্ত্র তৈরি করতে সময় লেগেছিল ৯ বছর। সেখানে মাত্র ১০ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জন্য শাসনতন্ত্র তৈরি করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই স্বাধীনতা লাভের মাত্র ২ মাসের মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের হয়রানি কমাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিয়েছে। দ্যুতাবাস অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসে ৩৪ ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেক দুতাবাসে হটলাইন চালুকরা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন চ্যানেল আই এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।