মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েভারতে কলকাতার বিশ্ব বাংলা স্বরনীতে মাদারস্ ওয়াক্স্র মিউজিয়ামের পাশে সভ্যতার প্রবীন সেবা...

ভারতে কলকাতার বিশ্ব বাংলা স্বরনীতে মাদারস্ ওয়াক্স্র মিউজিয়ামের পাশে সভ্যতার প্রবীন সেবা বিষয়ক পথশোভা

দীর্ঘ  ৭ বছর  যাবৎ  পিতা মাতার  ভরণ পোষন  আইনটি  প্রচারের  জন্য  নিজ খরচে কাজ করে যাচ্ছেন শাকিল হোসেন ও রেজওয়ানা হোসেন দম্পতি “সভ্যতা” নামক গণমাধ্যম সংস্থার মাধ্যমে।  তারা প্রচারে বলেন- “প্রবীণদের সেবা দিন, নিজের বার্ধক্যের প্র¯ত্ততি নিন” এবং “বৃদ্ধাশ্রম নয়, অধিকার প্রতিষ্ঠা থাকুক নিজ গৃহে”। এই ধারাকে প্রচারের জন্য গত ১৮ জানুয়ারী, শনিবার ২০২০ ভারতের কলকাতার বিশ্ব বাংলা স্বরনীতে অবস্থিত মাদার‘স ওয়াক্স্র মিউজিয়ামের পাশে এক পথশোভার আয়োজন করা হয়। পথশোভাতে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগন অংশগ্রহন করেন।
প্রচারে বলা হয়, যে পিতা-মাতার বদৌলতে আমাদের এ পৃথিবীর মুখ দেখা, আমাদের নিরাপদ শৈশব, কৈশোর যৌবনকাল, এমনকি পরিণত বয়সেও আমাদের যারা ‘সাহারা’ বা অভিভাবক, সময়ের ব্যবধানে যখন তারা আজ প্রৌঢ়ত্বের দ্বারপ্রান্তে এবং আমরা সেই বয়সে, যে বয়সে তাঁরা আমাদের দায়িত্বশীল পিতামাতা ছিলেন, তখন কি আমাদের একবারও স্মরণ হয় না, আমাদের জন্য কী কষ্টই না তারা করেছেন? আমরা যদি আমাদের স্ত্রী-সন্তানের খুশির জন্য আজ তাঁদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাই, এই যে শিক্ষাটি আমরা আজ আমাদের সন্তানদের দিচ্ছি, কাল যখন আমরা বৃদ্ধ হবো, তারা কি আমাদের পদাঙকই অনুসরণ করে আমাদেরকেও বৃদ্ধশ্রমে বা শ্রমশিবিরে পাঠাবে না?
জীবনে বেঁচে থাকলে বার্ধক্যের সংকট প্রতিটি মানুষকেই মোকাবেলা করতে হয়। যুগে যুগে, সমাজে সমাজে, প্রবীন বা বয়ঃজ্যোষ্ঠদের অবস্থান সত্যিই এক বিচিত্র বিষয়। সভ্যতার বিবর্তনে মানুষের সব আচার-আচরণেই পরিবর্তন এসেছে। পরিবারে, সংঘে, সমাজে, রাষ্ট্রে সকল পর্যায়েই এই সব আচার-আচরণে পরির্বতন দেখা যায়। তবে অনেক ব্যথা-বেদনায় সর্মাহত হই, যখন দেখি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতে মানুষের যত অগ্রগতিই হোক না কেন, মানুষ অর্থাৎ সমকালীন মানুষ তাদের আগের প্রজন্মের মানুষকে অবহেলা, অবজ্ঞা ও তাদেরকে দুরে রাখার এবং তাদের থেকে দুরে থাকার যেন এক তীব্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আমাদের ও পাশ্চাত্যের সমাজে সর্বত্র প্রায় একই চিত্র। আমাদের দেশে কিছুটা অভাব আর কিছুটা স্বাভাবের জন্য যেমন, বাইরের পৃথিবীতে শিল্পায়নের ফলে সৃষ্ট ব্যক্তি কেন্দ্রীকতার কারণে প্রবীন জনগোষ্ঠী আজ অবহেলার পাত্র। শেষ জীবনে ঠাঁই হচ্ছে কারো দয়া-দাক্ষিণ্যের কাছে কিংবা কোনো বৃদ্ধাশ্রমে। এইতো “বর্ণাঢ্য” জীবনের নিষ্ঠুর শেষ পরিণতি!
এ প্রসঙ্গে মানবতার দিশারী, বঙ্গবন্ধু-কণ্যা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানানো হয় এ জন্য যে, তাঁর-উদ্যোগে সন্তানের বৃদ্ধ পিতামাতার দেখাশোনা করার দায়দায়িত্ব আইনে রূপ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদে সন্তান পিতামাতার ভরণ পোষণ না দিলে এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে পিতামাতার ভরণপোষণ বিল সংসদে পাশ হয়েছে। জাতীয় সংসদে এতদসংক্রান্ত বিলটি সর্বসম্মত ভাবে কন্ঠভোটে পাশ হয়। সমাজে বৃদ্ধ বা বয়োঃজ্যোষ্ঠদের নিয়ে এই উদ্বেগ এবং এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে।এবং ভারতের নাগরীকদেরও প্রবীণ সেবা ও পিতা-মাতার প্রতি নিজ-নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য সচেষ্ট করার জন্য সকলকে আহ্ববান করা হয়।
স্বামী-স্ত্রী দুজনেই পেশায় সাংবাদিকতা করার পাশাপাশি সভ্যতা নামক একটি গণমাধ্যম সংস্থাও পরিচালনা করে আসছেন।  সভ্যতা গত প্রায়  ৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন সেমিনার, রোড শো, ক্যাম্পেইন ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে করে আসছেন  এছাড়াও বিশ্বের ১১ টি দেশের ২৬ জন সাংবাদিক নিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পকে প্রচারের জন্য সারা দেশে ভ্রমনের পাশাপাশি তাদেরকে নিয়ে প্রবীণ সেবার বিষয়ে রোড শো করেন। ২০১৯ সালে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কলকাতাতে প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন স্থানে রোড শো এর মধ্যমে  পিতা-মাতা ও প্রবীণদের সেবা করার অহ্বান জানান এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ভুমিকার কথা প্রচার করে ভারতের সাধারন জনগনকেও পিতা-মাতা ও প্রবীনদের প্রতি দায়িত্ববান হওয়ার আহব্বান জানান।পাশাপাশি এটাও প্রচার করা হয়, “ নিজ নিজ সন্তানদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করুন এবং বৃদ্ধ বয়সে সুখ ও সম্মানের সাথে বসবাস করুন”। এই দম্পত্তির স্বপ্ন দেশের কোন প্রবীণ যেন বৃদ্ধ বয়সে অবহেলার শিকার না হন সে জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি থানাতে ১ টি করে প্রবীণ সেবা কেন্দ্র চালু করার আপ্রান চেষ্ঠা চালিয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ