চট্টগ্রাম-৮ আসন উপ-নির্বাচনকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় বইছে ভোটের হাওয়া। ভোটের দিন ফুরিয়ে আসার সাথে সাথে ভোট দেওয়া নিয়ে আলাপ চলছে চায়ের দোকানে। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ঘাম ঝরানো ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রাথীরা। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা করতে দেখা গেলেও বাকী প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেখা যায়নি। নেই কোনো পোস্টার,হ্যান্ডবিল ও প্রচারণা ক্যাম্প।
প্রয়াত সাংসদ মইনুদ্দীন খান বাদলের শূণ্য আসনে মোট প্রার্থী ছয়জন। তারমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী মোছলেম উদ্দীন আহমেদ নৌকা প্রতীক, বিএনপির আবু সুফিয়ান ধানের শীষ প্রতীক, বিএনএফ প্রার্থী এস এম আবুল কালাম আজাদ টেলিভিশন প্রতীক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির বাপন দাশ গুপ্ত কুঁড়েঘর প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক আপেল প্রতীক ও ইসলামিক ফ্রণ্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মো.ফরিদ উদ্দীন চেয়ার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এদিকে আসন্ন উপনির্বাচনে প্রধান দুইদল ছাড়া আর কেউ অংশ নিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে। চাঁন্দগাও থানার ৪ নং ওয়ার্ডের টেকবাজার এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবু সুফিয়ান এবং মোছলেম উদ্দিন ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার নেই, দেখা যায়নি কোনো প্রচারণা। স্থানীয় জনগণের অধিকাংশই জানেন না মোছলেম উদ্দিন এবং আবু সুফিয়ান ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী এই উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
সিএনবি টেকবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি তো জানি না যে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি ছাড়া কেউ এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আপনাদের কাছেই প্রথম শুনলাম। আর জানবোই বা কি ভাবে? তাদের তো কোনো প্রচার-প্রচারণাই দেখলাম না এই এলাকায়। কোনো ব্যানার-লিফলেটও দেখি নাই। বোয়ালখালি উপজেলার প্রবীন অধ্যাপক রনজিত দেবনাথ বলেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ছাড়া অন্য প্রার্থীদের তেমন কোনো খোঁজ খবর নেই, নেই চোখে পড়ার মতো কোনো প্রচারণা। যদি জয় তাদের কাংখিত লক্ষ্য হয় তাহলে তো প্রচারণার কোনো বিকল্প নেই।
বোয়ালখালির কিছু এলাকায় চেয়ার প্রতীকের পোষ্টার ছেড়া হয়েছে আভিযোগ করে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, অনাকাঙ্খিত ভাবে আমাদের কিছু পোষ্টার ছেড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা বিষয়টা কে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কারণ পোষ্টার ছিড়ে তো আর জনপ্রিয়তা কমানো সম্ভব না, জনগণ আমাদের সাথে আছে এবং জয়ের কোনো বিকল্প আমরা চিন্তা করছি না।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনী আসনের সকল এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। লিফট-ব্যানার, মাইকিং এর মাধ্যমে এবং নিজে প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারণা করছি। জনগণের মাঝেও নিজের অবস্থান সুস্পষ্ট দেখছি, বাকিটা সময়ই বলে দিবে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম-৮ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি জনগণের দুঃখ দূর করার জন্য। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে সুনিশ্চিত জয় হবে বলে আশা করছি।
প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চারিদিকে তুমুল প্রচারণা করছে আমাদের লোকজন, এমনকি সাধারণ জনগণও আমাদের সাথে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। আপেল প্রতীক সবার মুখে মুখে শুনতে পাচ্ছি। নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েও আমি খুবই সন্তুষ্ট। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি নির্বাচনী নীতিমালা মেনে প্রচার-প্রচারণা করার। ইভিএম নিয়ে শংকা প্রকাশ করে কুঁড়েঘর প্রতীক বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী প্রার্থী বাপন দাশগুপ্ত বলেন, বর্তমান সময়ে এমন অনেক সাধারণ জনগণ আছে যাদের ইভিএম সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা পর্যন্ত নেই। মাত্র ৫-৬ দিনের ইভিএম প্রদর্শনী দিয়ে তো আর সবাইকে পুরোপুরি ধারণা দেয়া সম্ভব না, এই ক্ষেত্রে আমি শংকিত।
তিনি বলেন, আমি চাই উক্ত আসনের সংসদ সদস্য হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে। এখন পর্যন্ত সবকিছু তো ঠিকঠাকই মনে হচ্ছে, আশা করছি জয় আমাদেরই হবে। আর সেই উদ্দেশ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। টেলিভিশন প্রতীক বিএনএফ দলের প্রার্থী এস. এম. আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।